মালবিকাগ্নিমিত্রম্

এই অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয় মালবিকাগ্নিমিত্রম্ । মালবিকাগ্নিমিত্র টীকা লেখো বা কালিদাসের মালবিকাগ্নিমিত্রের মূল্যায়ন কর, বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সংস্কৃত :- मालविकाग्निमित्रम् এখানে মালবিকাগ্নিমিত্রম্ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ, বিষয়ে আলোচনা করবো। মালবিকাগ্নিমিত্র এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দ্বাদশ শ্রেণী ছাড়াও স্নাতক ও WBSSC এর SLST প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে শিক্ষার্থীদের খুব অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।

আমরা যাকে সাহিত্য বলি, সংস্কৃত অলংকার শাস্ত্রে তাই কাব্য নামে চিহ্নিত। রসাত্মক বাক্যে গুণ, অলংকারের মন্ডন ছাড়িয়ে কাব্যের অন্তর্গঢ় রসরূপ সহৃদয় পাঠকের মন আপ্লুত করে।সংস্কৃত সাহিত্যে ‘কাব্যং দ্বিবিধং দৃশ্যং শ্রব্যং চ’ অর্থাৎ কাব্য দুই প্রকার দৃশ্যকাব্য ও শ্রব্যকাব্য। দৃশ্যকাব্যের আধুনিক প্রতিশব্দ নাটক। মঞ্চে অভিনয় দর্শনের মাধ্যমে দৃশ্যকাব্য উপস্থাপিত হয়। এই দৃশ্যকাব্যের অপর নাম রূপক; কারণ এতে পাত্র-পাত্রীর উপর, নাটকীয় চরিত্রের রূপ আরোপ করা হয়। কবিকুল চূড়ামণি কালিদাসের পাঁচ অঙ্ক বিশিষ্ট একটি বিখ্যাত নাটক মালবিকাগ্নিমিত্রম্।

মালবিকাগ্নিমিত্রম্ টীকা

কবিকুল চূড়ামণি কালিদাসের পাঁচ অঙ্ক বিশিষ্ট একটি বিখ্যাত নাটক মালবিকাগ্নিমিত্রম্। এই নাটক সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য।

গ্রন্থমালবিকাগ্নিমিত্রম্
গ্রন্থবিভাগদৃশ্যকাব্য
রচয়িতামহাকবি কালিদাস
অঙ্কপাঁচটি
নায়কবিদিশারাজ অগ্নিমিত্র
নায়িকাবিদর্ভ-রাজকন্যা মালবিকা
রসশৃঙ্গার

মালবিকাগ্নিমিত্রম বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা

ভূমিকা – সংস্কৃত কাব্য সাহিত্য দরবারে মহাকবি কালিদাস রাজপুত্র রূপে সম্মানের অধিকারী। যেরূপ ইংরেজি সাহিত্যের সঙ্গে শেক্সপিয়ারের নাম জড়িত, বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের নাম সম্পৃক্ত, সংস্কৃত সাহিত্যের সঙ্গে কালিদাসের নাম চিরগ্রথিত।

মহাকবি কালিদাসের নাটকগুলির পৌর্বাপর্যে ”মালবিকাগ্নিমিত্রম্”- কে প্রথম সৃষ্টি বলে কেউ কেউ মনে করেন। কারন, এই নাটকের উপস্থাপনায় কালিদাস “নবেন নাটকেনোপস্থাতব্যম্ অস্মাভিঃ” বলে শুরু করেছেন। এই নাটকটিতে তরুণ মনের পেমচঞল আবেগ ও বৈচিত্র্য কবি তাঁর রঙে ও রসে উদ্ভাসিত করেছেন।

কবিপরিচয়

কালিদাসের আবির্ভাবকাল ও ব্যক্তি জীবন ঘন অন্ধকারের অবগুন্ঠনে অবগুণ্ঠিত কালিদাস নিঃসন্দেহে অশ্বঘোষ ও ভাসের পরবর্তীকালের কবি। সকল দিক বিবেচনা করলে বলা যায় যে খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকের শেষ অথবা খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের প্রথম ভাগে তিনি বর্তমান ছিলেন।

বিষয়বস্তু

বিদর্ভ-রাজকন্যা মালবিকা ও বিদিশারাজ অগ্নিমিত্রের প্রণয়কাহিনী নিয়ে এই পঞ্চাঙ্ক নাটকটি রচিত। বিদর্ভরাজ মাধব সেন রাজ্যচ্যূত হলে ঠিক করলেন নিজ ভগিনী মালবিকার সঙ্গে অগ্নিমিত্রের বিবাহ দেবেন। বিদিশায় পাঠানোর সময় পথে দস্যুরা আক্রমণ করলে অগ্নিমিত্রের সেনাপতি মালবিকাকে উদ্ধার করে অগ্নিমিত্রের প্রথমা পত্নী ধারিণীর সেবায় নিযুক্ত করেন।

মালবিকার চিত্র দর্শন করে রাজা তার প্রতি আসক্ত হন। রাণি সবসময়ই মালবিকাকে তাঁর চোখের আড়ালে রাখতে চান। কিন্তু বিদুষকের কৌশলে রাজা একদিন মালবিকাকে উদ্যানে দেখতে পান। মালবিকাও অগ্নিমিত্রের প্রতি অনুরাগের ইঙ্গিত দিলে রাজার দ্বিতীয়া পত্নী ইরাবতী তা দেখে ফেলেন এবং রাজাকে সেখানেই অপমান করেন। ধারিণীও এই নবীন প্রণয় বন্ধ করে দেওয়ার জন্য মালবিকাকে গৃহরুদ্ধ করে রাখেন। কিন্তু বিদুষকের কৌশলে মালবিকার মুক্তি ঘটে। এমন সময় সংবাদ পাওয়া যায় যে, বিদর্ভ রাজের পরাজয় ঘটেছে। সেই সঙ্গে মালবিকাও যে রাজকন্যা একথা প্রকাশ পায়। এদিকে ধারিণীর পুত্র বসুমিত্র যবনদের পরাজিত করেন। পুত্রের বিজয় গৌরবে ধারিণী মালবিকার সঙ্গে অগ্নিমিত্রের বিবাহের অনুমতি দেন। ইরাবতীও এই আনন্দের দিনে আর বাধা দিলেন না।

মূল্যায়ন

এই নাটকটির মধ্য দিয়ে রাজান্তঃপুরের ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। লাবণ্যময়ী মালবিকার নৃত্যভঙ্গীর উপযোগী অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সৌষ্ঠবের বর্ণনা কত চমৎকার- “ছন্দোঃ নর্তয়িতুমর্থৈব মনসি শ্লিষ্টং তথাস্যা বপুঃ” নাটকটিতে বিদুষক এক অতুলনীয় গরিমায় চিত্রিত। নাটকটিতে প্রেম, সম্ভোগ ও রূপতৃষ্ণার আকৃতি বেশ নিষ্ঠার সঙ্গে প্রকাশ পেয়েছে। এর রসাস্বাদনে রসজ্ঞ সমাজও অবশ্যই তৃপ্ত হয়েছেন। নাটকটির শুরুতেই কবির যে সংশয়, তা সামান্য মাত্র প্রতিফলিত না হয়ে নাটকটি কবি প্রতিভায় সার্থক রূপ পেয়েছে।

অনুরূপ পাঠ

মালবিকাগ্নিমিত্রম্ এর মত একইধরণের বিষয় জানতে নিম্নের LINK এ CLICK করুন ।

মালবিকাগ্নিমিত্রম্ থেকে জিজ্ঞাস্য
1) মহাকবি কালিদাস কোন্ সময়ের কবি?

খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতক থেকে খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের।

2) মালবিকাগ্নিমিত্রম্ নাটকে নায়কের নাম লিখ।

বিদিশারাজ অগ্নিমিত্র।

3) অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ কয় অঙ্কে লিখিত নাটক?

পাঁচ।

ধন্যবাদ

আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈

আমদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে CLICK HERE👈 

Leave a Comment