কবিকুল চূড়ামণি কালিদাসের সাত অঙ্ক বিশিষ্ট একটি বিখ্যাত নাটক অভিজ্ঞানশকুন্তলম্। এখানে অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ, বিষয়ে আলোচনা করবো। WBCHSE এর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্যও অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ সম্পর্কে নিখুতভাবে জানা দরকার। WBSSC এর SLST ক্ষেত্রে এই আলোচ্য বিষয় অতীব জরুরী।
আমরা যাকে সাহিত্য বলি, সংস্কৃত অলংকার শাস্ত্রে তাই কাব্য নামে চিহ্নিত। রসাত্মক বাক্যে গুণ, অলংকারের মন্ডন ছাড়িয়ে কাব্যের অন্তর্গঢ় রসরূপ সহৃদয় পাঠকের মন আপ্লুত করে।সংস্কৃত সাহিত্যে ‘কাব্যং দ্বিবিধং দৃশ্যং শ্রব্যং চ’ অর্থাৎ কাব্য দুই প্রকার দৃশ্যকাব্য ও শ্রব্যকাব্য। দৃশ্যকাব্যের আধুনিক প্রতিশব্দ নাটক। মঞ্চে অভিনয় দর্শনের মাধ্যমে দৃশ্যকাব্য উপস্থাপিত হয়। এই দৃশ্যকাব্যের অপর নাম রূপক; কারণ এতে পাত্র-পাত্রীর উপর, নাটকীয় চরিত্রের রূপ আরোপ করা হয়। সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসে মহাকবি কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ দৃশ্যকাব্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।
গ্রন্থ | অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ |
গ্রন্থবিভাগ | দৃশ্যকাব্য |
রচয়িতা | মহাকবি কালিদাস |
অঙ্ক | সাতটি |
নায়কা | দুষ্যন্ত |
নায়িক | শকুন্তলা |
রস | শৃঙ্গার, করুণ |
অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ টীকা
অভিজ্ঞানশকুন্তল দৃশ্যকাব্যের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসে মহাকবি কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ দৃশ্যকাব্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।
অভিজ্ঞানশকুন্তল বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা
সংস্কৃত কাব্য সাহিত্য দরবারে মহাকবি কালিদাস রাজপুত্র রূপে সম্মানের অধিকারী। যেরূপ ইংরেজি সাহিত্যের সঙ্গে শেক্সপিয়ারের নাম জড়িত, বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের নাম সম্পৃক্ত, সংস্কৃত সাহিত্যের সঙ্গে কালিদাসের নাম চিরগ্রথিত।
কাল
কালিদাসের আবির্ভাবকাল ও ব্যক্তি জীবন ঘন অন্ধকারের অবগুন্ঠনে অবগুণ্ঠিত কালিদাস নিঃসন্দেহে অশ্বঘোষ ও ভাসের পরবর্তীকালের কবি। সকল দিক বিবেচনা করলে বলা যায় যে খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকের শেষ অথবা খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের প্রথম ভাগে তিনি বর্তমান ছিলেন।
বিষয়বস্তু
এই নাটকে কালিদাস কণ্বের আশ্রম পালিতা কন্যা শকুন্তলা ও পুরুবংশীয় রাজা দুষ্যন্তের প্রেমকাহিনী অতি সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। একদা মৃগয়াবিহারী রাজা দুষ্যন্ত এক হরিণের পিছু ধাবনে মহর্ষি কণ্বের আশ্রমে উপস্থিত হন। সেখানে শকুন্তলাকে অপর দুই সখীর সাথে দেখে মুগ্ধ হয়ে গান্ধর্ব মতে বিবাহ করেন। দুষ্যন্ত রাজধানীতে ফিরে যাবার পর পতি চিন্তায় নিমগ্না শকুন্তলা অতিথি সৎকাররূপ কর্তব্যে অবহেলা করায়, দুর্বাসা কর্তৃক অভিশপ্ত হন। এই অভিশাপের জন্য দুষ্যন্ত শকুন্তলাকে চিনতে পারলেন না, পরস্ত্রী ভেবে প্রত্যাখ্যান করলেন। ঘটনাচক্রে শকুন্তলাকে দেওয়া রাজার নামাঙ্কিত আংটিটি পেয়ে রাজার উপর শাপের প্রভাব কেটে যায় এবং তিনি শকুন্তলাকে ফিরে পাওয়ার জন্য আকুল হন। ঘটনাক্রমে মারীচ ঋষির স্বর্গ-তপোবনে তপস্বিনী শকুন্তলা ও ভরতের সাথে তাঁর মিলন হয়।
সমালোচনা
প্রাচ্য, পাশ্চাত্য সকল মনীষীই এই নাটকের অকুন্ঠ প্রশংসা করেছেন। ঘটনাবিন্যাসে, বর্ণনার সজীবতায়, ভাবের গভীরতায়, নাট্যকল্পনার বৈচিত্র্যে নাটকটির উৎকর্ষ তর্কাতীত। তাই বলা হয় “কালিদাসস্য সর্বস্বমভিজ্ঞানশকুন্তলম্”।
উপসংহার
কালিদাসের কাব্যশিল্প স্বচ্ছ, সুন্দর ও রমণীয়। বৈদর্ভী রীতি, অলংকারের সুষুমা, ছন্দের ঝংকার, ভাব ও ভাষার সমন্বিত তাৎপর্য – কালিদাসের তিনটি নাটকেই বিশিষ্টতার পরিচয় দেয়। তিনি মানবতাবাদী কবি মানব মহত্বকেই প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন বলেই কালিদাস পরবর্তী মানবসমাজে এতখানি গ্রহণীয় হতে পেরেছেন। ভারতীয় পন্ডিতরা কালিদাসের অদ্বিতীয়ত্ব স্বীকার করে বলেছেন, “পুরা কবীনাং গণনাপ্রসঙ্গে কনিষ্ঠিকাধিষ্ঠিতকালিদাসঃ”।
অনুরূপ পাঠ
অভিজ্ঞানশকুন্তল নাটক এর মত একইধরণের বিষয় জানতে নিম্নের LINK এ CLICK করুন ।
- প্রতিজ্ঞাযৌগন্ধরায়ণ 👈
- স্বপ্নবাসবদত্তা 👈
- দূতবাক্য 👈
- অবিমারক 👈
- পঞ্চরাত্র 👈
- হর্ষচরিত 👈
- গীতগোবিন্দম্ 👈
- মেঘদূত 👈
- বিক্রমোর্বশীয়ম্ 👈
- মালবিকাগ্নিমিত্রম্ 👈
- অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ 👈
- মৃচ্ছকটিক 👈
- মুদ্রারাক্ষস 👈
- পঞ্চতন্ত্র 👈
- হিতোপদেশ 👈
- হর্ষচরিত 👈
- কাদম্বরী 👈
অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ থেকে জিজ্ঞাস্য
খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতক থেকে খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের।
অভিজ্ঞানশকুন্তলম্।
সপ্তাঙ্কে।
ভাস সমস্যা কী? এর উত্তর জানতে Link এ click করুন।