এই অধ্যায়ে আমরা শিখব সংস্কৃত বিসর্গসন্ধি । সপ্তম, অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণী , স্নাতক , স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ছাড়াও WBSSC এর SLST পরীক্ষার্থীদের বিসর্গসন্ধি অনুশীলন করতে হবে ।
আমরা জানব বিসর্গসন্ধি কাকে বলে, বিসর্গসন্ধির বিভিন্ন নিয়ম ও সূত্র। এখানে আপনাদের সাহায্যার্থে বিসর্গসন্ধির পুরো বিষয়টিকে খুব সহজভাবে তুলে ধরতে চাইছি, যাতে খুব সহজে আপনাদের বোধগম্য হয়। সংস্কৃত বিসর্গসন্ধি
বিসর্গসন্ধি কাকে বলে
বিসর্গের সঙ্গে স্বরবর্ণের কিংবা বিসর্গের সঙ্গে ব্যঞ্জনবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে বিসর্গসন্ধি বলে। প্রকৃতি-বিচারে বিসর্গসন্ধি ব্যঞ্জনসন্ধিরই অন্তর্গত। যথা—
- পুনঃ + অপি = পুনরপি
- বালকঃ + অয়ম্ = বালকোহয়ম্
- সদ্যঃ + জাতঃ = সদ্যোজাতঃ
- শিরঃ + ছেদঃ = শিরশ্ছেদঃ
বিসর্গ দুই প্রকার—স্-জাত বিসর্গ ও র্-জাত বিসর্গ।
স্-স্থানে যে বিসর্গ হয়, তাকে স্-জাত বিসর্গ বলে। যথা—
- পয়স্ = পয়ঃ
- মনস্= মনঃ
- যশস্ = যশঃ
- নমস্ = নমঃ
র্-স্থানে যে বিসর্গ হয়, তাকে র্-জাত বিসর্গ বলে। যথা—
- প্রাতর্ = প্রাতঃ
- অন্তর্=অন্তঃ
- নির্ = নিঃ
- পুনর্ = পনঃ
বিসর্গসন্ধির নিয়ম
বিসর্গসন্ধির নিয়মগুলি সূত্র সহ আলোচনা করব। কিন্ত অল্পবয়সী শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র সূত্রে বুঝতে অসুবিধা হবে। তাই সূত্রের অর্থকে ভেঙে ভেঙে আলোচনা করা হলো।
1) যদি বিসর্গের পরে চ্ কিংবা ছ্ থাকে, তাহলে বিসর্গ স্থানে তালব্য শ্ হয়। যথা-
- পূর্ণঃ + চন্দ্রঃ = পূর্ণশ্চন্দ্রঃ
- শিরঃ + ছেদঃ = শিরশেছেদঃ
- নিঃ + চয়ঃ = নিশ্চয়ঃ
- নিঃ + চিতঃ = নিশ্চিতঃ
- তরোঃ + ছায়া = তরোশ্ছায়া
- রবেঃ + ছবিঃ=রবেশ্ছবি
2) যদি বিসর্গের পরে ট্ কিংবা ঠ্ থাকে, তাহলে বিসর্গ বিসর্গ স্থানে ষ্ হয়। যথা—
- ধনুঃ + টঙ্কারঃ = ধনুষ্টঙ্কারঃ
- ভগ্নঃ + ঠক্কুরঃ = ভগ্নষ্ঠক্কুরঃ
3) যদি বিসর্গের পরে ত্ কিংবা থ্ থাকে, তাহলে বিসর্গ স্থানে স্ হয়। যথা-
- উন্নতঃ + তরুঃ = উন্নতস্তরুঃ
- ভূমেঃ + তলম্ = ভূমেস্তলম্
- ক্ষিপ্তঃ + থুৎকারঃ = ক্ষিপ্তস্থুৎকারঃ
4) যদি র্-জাত ও স্-জাত বিসর্গের পরে শ্ ষ্ স্ থাকে, তাহলে র্-জাত ও স্-জাত উভয় প্রকার বিসর্গ স্থানেই যথাক্রমে বিকল্পে শ্ ষ্ স্ হয়। যথা
- মত্তঃ + ষট্পদঃ = মন্তষ্ষট্পদঃ, মত্তঃ ষট্পদঃ
- সুপ্তঃ + শিশুঃ = সুপ্তশ্শিশুঃ, সুপ্তঃ শিশুঃ
- প্রথমঃ + সর্গঃ = প্রথমস্সর্গঃ, প্রথমঃ সর্গঃ
5) যদি অ-কারের পর স্-জাত বিসর্গ থাকলে এবং পরে অ-কার থাকে, তাহলে পূর্ব অ-কার ও বিসর্গ উভয়ে মিলে ও-কার হয়। ঐ ও-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। আর পরবর্তী অ-কারের লোপ হয়। লুপ্ত অ-কারের চিহ্নস্বরূপ ‘হ’ এইরূপ চিহ্ন থাকে। যথা-
- নরঃ + অয়ম্ = নরোহয়ম্
- প্রথমঃ + অধ্যায়ঃ = প্রথমোহধ্যায়ঃ
- ততঃ + অধিকঃ= ততোহধিকঃ
- বেদঃ + অধীতঃ = বেদোহধীতঃ
6) যদি অ-কারের পর বিসর্গ থাকে এবং পরে বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণ, অথবা য্ ব্ র্ ল্ হ্ থাকে, তাহলে পূর্ব অকার ও বিসর্গ মিলে ও-কার হয়। এই ও-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যথা—
- মধুরঃ + গন্ধঃ = মধুরো গন্ধঃ
- সুন্দরঃ + ঘট = সুন্দরো ঘটঃ
- সদ্যঃ + জাতঃ = সদ্যোজাতঃ
- কুতঃ + যত্নঃ = কুতো যত্নঃ
- নরঃ + গচ্ছতি = নরো গচ্ছতি
- সদ্যঃ + জাতঃ = সদ্যোজাতঃ
- নবঃ + ভম্বরঃ = নবো ডম্বরুঃ
- পূর্ণঃ + ঘটঃ = পুর্ণো ঘটঃ
- মধুরঃ + ঝংকারঃ = মধুরোঝংকারঃ
- পরমঃ + ধর্মঃ=পরমোধর্মঃ
- নির্বাণঃ + দীপঃ = নির্বাণোদীপঃ
- বৃদ্ধঃ + নৃপঃ = বৃদ্ধোনৃপঃ
7) যদি আ-কারের পর বিসর্গ থাকে বা ‘ভোঃ’ শব্দে যে বিসর্গ থাকে এবং পরে স্বরবর্ণ, বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণ অথবা য্ ব্ র্ ল্ হ্ থাকে, তাহলে ভোঃ শব্দের বিসর্গ বা আ-কারের পরবর্তী বিসর্গের লোপ হয়। লোপের পর আর সন্ধি হয় না। যথা—
- গজাঃ + অমী = গজা অমী
- হতাঃ + গজাঃ = হতা গজাঃ
- অশ্বাঃ + ধাবন্তি = অশ্বা ধাবন্তি
- ভোঃ + বালকঃ = ভো বালকঃ
- তারাঃ + উদিতাঃ = তারা উদিতাঃ
- পুত্রাঃ + জাতাঃ = পুত্রা জাতাঃ
8) যদি অ-কারের পরে বিসর্গ থাকে এবং পরে অ-কার ভিন্ন স্বরবর্ণ থাকে, তাহলে অ-কারের পরবর্তী বিসর্গ লোপ পায়। লোপের পর আর সন্ধি হয় না। যথা—
- কুতঃ + আগতঃ = কুত আগতঃ
- নরঃ + ইব = নর ইব
- চন্দ্রঃ + উদেতি = চন্দ্র উদেতি
- দেবঃ + ঋষিঃ = দেব ঋষিঃ
9) যদি অ, আ ভিন্ন স্বরবর্ণের পর বিসর্গ থাকে এবং পরে স্বরবর্ণ, বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণ অথবা য্ ব্ র্ প হ থাকে, তা হলে বিসর্গ স্থানে ‘র্’ হয়। ‘র্’ পরের স্বরবর্ণের সহিত যুক্ত হয়, বা পরের বাঞ্জনবর্ণের মস্তকে রেফ হয়ে যুক্ত হয়। যথা—
- শ্রীঃ + অসৌ = শ্রীরসৌ
- গুরুঃ + উবাচ = গুরুরুবাচ
- তৈ + উক্তম্ = তৈরুক্তম্
- কবিঃ + অয়ম্ = কবিরয়ম্
- সুধীঃ + এষঃ = সুধীরেষঃ
- নিঃ + ধনঃ = নিৰ্ধনঃ
- নিঃ + লোভঃ = নির্লোভঃ
- দুঃ + নীতিঃ = দুর্নীতিঃ
- বহিঃ + গচ্ছতি = বহির্গচ্ছতি
- বহিঃ + যোগঃ = বহির্যোগঃ
- বায়ুঃ + বাতি = বায়ুর্বাতি
10) যদি অ-কারের পর ‘র্’-জাত বিসর্গ থাকে এবং পরে স্বরবর্ণ, বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণ বা য্ ব্ র্ ল্ হ্ থাকে, তা হলে সেই বিসর্গ স্থানে ‘র্’ হয়। যথা—
- পুনঃ + অপি = পুনরপি
- প্রাতঃ + আগতঃ = প্রাতরাগতঃ
- মাতঃ + এহি = মাতরেহি
- অহঃ + নিশম্ = অহর্নিশম্
- স্বঃ + গতঃ = স্বর্গতঃ
11) ‘র্’ পরে থাকিলে বিসর্গ স্থানে যে ‘র্’ হয়, তার লোপ হয় এবং বিসর্গের পূর্ববর্তী হ্রস্বস্বর দীর্ঘ হয়। যথা—
- পুনঃ + রমতে = পুনারমতে
- প্রাতঃ + রম্যম্ = প্রাতারম্যম্
- নিঃ + রসঃ = নীরসঃ
- নিঃ + রাজনা = নীরাজনা
- মাতুঃ + রোদনম্ = মাতূরোদনম্
- চক্ষুঃ + রোগঃ = চক্ষূরোগঃ
- পিতঃ + রক্ষঃ = পিতারক্ষঃ
- বিধুঃ + রাজতে = বিধূরাজতে
12) সঃ’ও ‘এষঃ’ এই দুই পদের বিসর্গের পর অ-কার ভিন্ন যে কোন বর্ণ থাকিলে বিসর্গের লোপ হয়। লোপের পর আর সন্ধি হয় না। যথা—
- সঃ + করোতি = স করোতি
- সঃ + বদতি = স বদতি
- এষঃ + হসতি = এষ হসতি
(অসম্পূর্ণ)
অনুরূপ পাঠ
নিম্নলিখিত বিষয়গুলি জানতে Link এ Click করুন।
- সংস্কৃত সন্ধি প্রকরণ👈
- সংস্কৃত স্বরসন্ধি👈
- সংস্কৃত ব্যঞ্জনসন্ধি👈
- সংস্কৃত বিসর্গসন্ধি
- সংস্কৃত সন্ধি নিষেধ👈
- সংস্কৃত নিপাতন সন্ধি👈
সংস্কৃত বিসর্গসন্ধি থেকে জিজ্ঞাস্য
দুই প্রকার।
শ্ হয়।
নীরবঃ
ধন্যবাদ
আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈
আমদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে CLICK HERE👈