কবিকুল চূড়ামণি কালিদাসের রামায়ণ ও পদ্মপুরাণের কাহিনি অবলম্বনে উনিশ সর্গে রচিত রঘুবংশম্ শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য। এখানে রঘুবংশম্ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ, বিষয়ে আলোচনা করবো। রঘুবংশম্ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর বা টীকা লেখ। Raghuvansham in bengali যাইহোক, কালিদাসের রঘুবংশম্ উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়া WBSSC এর SLST পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
মহাভাষ্যতে পতঞ্জলি আখ্যান ও আখ্যায়িকার কথা তুলে আখ্যান হিসেবে যবক্রীত, প্রিয়ঙ্গু ও যযাতির গল্প এবং আখ্যায়িকা হিসেবে সুমনোত্তরা ও বাসবদত্তা বিষয়ক সুমনোত্তরা ও বাসবদত্তা নামে দুটি রচনার দৃষ্টান্ত দিয়েছেন। অধিকৃত্য কৃতে গ্রন্থে সূত্রের মহাভাষ্যতে তিনটি আখ্যায়িকার নাম আছে। বাসবদত্তা, সুমনোত্তরা ও ভৈমরথী। শেষেরটি ভীমরথের বৃত্তান্ত। তেন প্রোক্তম্ সূত্রের মহাভাষ্যতে উল্লিখিত আছে, বাররুচং কাব্যম, জালুকাঃ শ্লোকাঃ। অন্যত্র বাররুচাঃ শ্লোকাঃ, হৈকুপাদো গ্রন্থঃ ভৈকুরাটো গ্রন্থঃ ইত্যাদির কথা। মহাভাষ্যতে নানা প্রসঙ্গে অনেকগুলি কাব্যশ্লোকের উদ্ধৃতিও চোখে পড়ে। তা ছাড়া পাণিনি ও বররুচির নামে কিছু শ্লোক সংকলন গ্রন্থগুলিতে স্থান পেয়ে আসছে। সুতরাং সংস্কৃত কাব্যচর্চার ঐতিহ্য খুব প্রাচীন। পিঙ্গলের ছন্দঃসূত্রে বেদ- বহির্ভূত লৌকিক ছন্দের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রমাণ ছড়িয়ে আছে। কান্তোৎপীড়া, চারুহাসিনী, চঞ্চলাক্ষিকা, বসন্ততিলকা, মঞ্জুরী, মালা ইত্যাদি ছন্দের নামও কাব্য চর্চার নিশ্চিন্ত সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য হতে পারে। এ ছাড়া আছে প্রাচীন লেখগুলির কাব্যভাষার প্রমাণ। যেমন মহাক্ষত্রপ বুদ্রদমনের আমলে তৈরি গিরনারলেখ -এর অলংকৃত ভাষা। জাম্ববতীজয় ও পাতালবিজয় নামে দুটি কাব্য পাণিনির লেখা বলে রাজশেখর উল্লেখ করেছিলেন। আরও কিছু বিক্ষিপ্ত শ্লোক পাণিনির নামে চলে আসছে। পাণিনি- বিরুদ্ধ বাক্য-প্রয়োগ অবশ্য প্রমাণ দেবে, এগুলির কবি বৈয়াকরণ পাণিনি নন, অন্য কেউ। এ সব লেখার প্রকাশভঙ্গি কাব্যচর্চার সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের স্মারক যা অশ্বঘোষ ও কালিদাসের কাব্যে নবকলেবরে প্রস্ফুটিত হয়েছে বলা চলে।
রঘুবংশম্ টীকা
মহাকবি কালিদাসের রঘুবংশমের কিছু তথ্য।
গ্রন্থ | রঘুবংশম্ |
গ্রন্থবিভাগ | মহাকাব্য |
রচয়িতা | মহাকবি কালিদাস |
সর্গ | উনিশটি |
রঘুবংশ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা
সংস্কৃত কাব্য সাহিত্য দরবারে মহাকবি কালিদাস রাজপুত্র রূপে সম্মানের অধিকারী। যেরূপ ইংরেজি সাহিত্যের সঙ্গে শেক্সপিয়ারের নাম জড়িত, বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের নাম সম্পৃক্ত, সংস্কৃত সাহিত্যের সঙ্গে কালিদাসের নাম চিরগ্রথিত।
মহাকবি কালিদাস সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। তাঁর লেখনীর স্পর্শে কাব্য-নাটক মহিমান্বিত হয়েছে। দেশ ও কালের সীমা অতিক্রম করে তাঁর কবিকৃতি বিশ্ব সাহিত্যের দরবারে শাশ্বত প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছে। তিনি সংস্কৃত সাহিত্য জগতকে দুটি মহাকাব্য উপহার দিয়েছেন — “কুমারসম্ভবম” ও “রঘুবংশম্”। রঘুবংশম্ কাব্যের কাহিনী মূলতঃ রামায়ণ থেকে গৃহীত। কিন্তু তাঁর সৃজনী প্রতিভার দ্বারা রামায়ণের কাহিনীকে অনেকখানি পরিমার্জিত করেছেন।
কবিপরিচয়
কালিদাসের আবির্ভাবকাল ও ব্যক্তি জীবন ঘন অন্ধকারের অবগুন্ঠনে অবগুণ্ঠিত কালিদাস নিঃসন্দেহে অশ্বঘোষ ও ভাসের পরবর্তীকালের কবি। সকল দিক বিবেচনা করলে বলা যায় যে খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকের শেষ অথবা খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের প্রথম ভাগে তিনি বর্তমান ছিলেন।
বিষয়বস্তু
রঘুবংশম্ মহাকাব্যের সর্গ সংখ্যা উনিশ। এই উনিশটি সর্গে বর্ণিত হয়েছে রঘুবংশীয় ২৯ জন রাজার উত্থান – পতনের ইতিহাস।
ইক্ষ্বাকুবংশের রাজা রূপে, গুনে ও রাজ্যশাসনে আদর্শ পুরুষ, কিন্তু নিঃসন্তান। গুরু বশিষ্ট তাঁকে উপদেশ দিলেন — আশ্রমে যে নন্দিনী গাভী আছে পরিচর্যা দ্বারা তাকে তুষ্ট করলে তাঁর সন্তান লাভ হতে পারে। দিলীপ নন্দিনী সেবা করে পুত্র লাভের বর পেলেন — ” বংশস্য কর্তারমনন্তকীর্তিং সুদক্ষিণায়ং তনয়ং যযাচে।” এই বরে তিনি যে পুত্রলাভ করলেন তিনিই রঘু। রঘু রাজা হয়ে বিশ্বজিৎ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করলেন। রঘুর পুত্র অজ পিতার আদেশে ইন্দুমতিকে বিবাহ করেন। অজের পুত্র দশরথ। দশরথের পুত্র রামচন্দ্র। রামচন্দ্রের বিবাহ থেকে সীতার পাতাল প্রবেশ পর্যন্ত কাহিনী এতে বর্ণিত হয়েছে। রামচন্দ্রের পর কুশের শাসন। কুশের পুত্র অতিথি। এভাবে অগ্নিবর্ণ পর্যন্ত ২৯ জন রাজার পরপর রাজকাহিনী বর্ণিত হয়েছে। অগ্নিবর্ণের রাজ্যলাভের পর তিনি ভোগবিলাসে মত্ত হওয়ায় বংশের অবক্ষয় ও বিনষ্টি ঘনিয়ে আসে।
মূল্যায়ন
রঘুবংশ কালিদাসের পরিণত রচনা শক্তির পরিচয় দেয়। পরিণত বয়সে কবি জীবনের আদি, মধ্য ও অন্ত সমন্বিত নিটোল রূপ না দেখিয়ে পরিবর্তনশীল জীবনের প্রবাহমানতাই দেখাতে চেয়েছিলেন। তাই নশ্বর জগতের কর্তব্যময় জীবনের আদর্শ ইক্ষ্বাকুবংশের রাজাদের মধ্যে তুলে ধরেছেন। পরিশেষে অগ্নিবর্ণের মাধ্যমে দেখিয়েছেন আদর্শহীন ভোগময় জীবনে আত্যন্তিক বিনষ্টের কারণ।
কালিদাসের প্রকৃতি বর্ণনার কৃতিত্ব অসাধারণ। সমুদ্র, পর্বত, অরণ্যের শোভা বর্ণনায় রঘুবংশের ত্রয়োদশ সগটি আশ্চর্য সুন্দর কতকগুলি উপমার জন্য স্মরণীয়। যেমন –
“দূরাদয়শ্চক্রনিভস্য তন্বী তমালতালীবনরাজিনীলা।
আভাতি বেলা লবণাম্বুরাশের্ধারা নিবদ্ধেব কলঙ্করেখা।।”
অনুরূপ পাঠ
রঘুবংশম্ এর মত একইধরণের বিষয় জানতে নিম্নের LINK এ CLICK করুন ।
- প্রতিমা নাটক 👈
- অভিষেক 👈
- প্রতিজ্ঞাযৌগন্ধরায়ণ 👈
- স্বপ্নবাসবদত্তা 👈
- মধ্যমব্যায়োগ 👈
- ঊরুভঙ্গ 👈
- দূতবাক্য 👈
- অবিমারক 👈
- পঞ্চরাত্র 👈
- গীতগোবিন্দম্ 👈
- মেঘদূত 👈
- বিক্রমোর্বশীয়ম্ 👈
- মালবিকাগ্নিমিত্রম্ 👈
- অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ 👈
- মৃচ্ছকটিক 👈
- মুদ্রারাক্ষস 👈
- পঞ্চতন্ত্র 👈
- হিতোপদেশ 👈
- হর্ষচরিত 👈
- কাদম্বরী 👈
রঘুবংশম্ থেকে জিজ্ঞাস্য
1) মহাকবি কালিদাস কোন্ সময়ের কবি?
2) মালবিকাগ্নিমিত্রম্ নাটকে নায়কের নাম লিখ।
3) রঘুবংশম্ কয় সর্গে লিখিত?
ধন্যবাদ
আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈
আমদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে CLICK HERE 👈