কালিদাস পূর্ব নাট্যকারদের মধ্যে ভাস অন্যতম। কালিদাস তার মালবিকাগ্নিমিত্র নাটকে প্রথিতযশা ভাসের নাম করেছেন। বানভট্টও ভাস নাটকচক্রের খ্যাতির কথা বলেছেন। মহাকবি ভাস নিজের কবিত্বের পরিচয় যত শ্রদ্ধাস্পদ নিজের ব্যক্তিত্ব নিয়ে ততই বিবাদাস্পদ। WBCHSE এর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্যও ভাস সমস্যা সম্পর্কে নিখুতভাবে জানা দরকার। WBSSC এর SLST ক্ষেত্রে এই আলোচ্য বিষয় অতীব জরুরী।
আমরা যাকে সাহিত্য বলি, সংস্কৃত অলংকার শাস্ত্রে তাই কাব্য নামে চিহ্নিত। রসাত্মক বাক্যে গুণ, অলংকারের মন্ডন ছাড়িয়ে কাব্যের অন্তর্গঢ় রসরূপ সহৃদয় পাঠকের মন আপ্লুত করে।সংস্কৃত সাহিত্যে ‘কাব্যং দ্বিবিধং দৃশ্যং শ্রব্যং চ’ অর্থাৎ কাব্য দুই প্রকার দৃশ্যকাব্য ও শ্রব্যকাব্য। দৃশ্যকাব্যের আধুনিক প্রতিশব্দ নাটক। মঞ্চে অভিনয় দর্শনের মাধ্যমে দৃশ্যকাব্য উপস্থাপিত হয়। এই দৃশ্যকাব্যের অপর নাম রূপক; কারণ এতে পাত্র-পাত্রীর উপর, নাটকীয় চরিত্রের রূপ আরোপ করা হয়। কালিদাস পূর্ব নাট্যকারদের মধ্যে ভাস অন্যতম। কালিদাস তার মালবিকাগ্নিমিত্র নাটকে প্রথিতযশা ভাসের নাম করেছেন। বানভট্টও ভাস নাটকচক্রের খ্যাতির কথা বলেছেন। মহাকবি ভাস নিজের কবিত্বের পরিচয় যত শ্রদ্ধাস্পদ নিজের ব্যক্তিত্ব নিয়ে ততই বিবাদাস্পদ। যাইহোক, ভাসের নাটকচক্র উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়া WBSSC এর SLST পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ভাস সমস্যা কী
১৯০৯ থেকে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় পন্ডিত টি. গণপতি শাস্ত্রী মহাশয় দক্ষিণ ভারতের কেরল অঞ্চলে ১৩ টি নাটকের পান্ডুলিপি আবিষ্কার করেন। ত্রিবেন্দ্রাম সংস্কৃত সিরিজ থেকে ‘ভাসনাটকচক্রম্’ নামে পুস্তকাকারে নাটকগুলি প্রকাশ পায়। কিন্তু এই নাটক গুলির রচয়িতা কে? কবির আবির্ভাবকাল কত? নাটকগুলি নাট্যকারের নিজের রচিত কিনা? এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে পন্ডিতদের মধ্যে প্রবল বাগ্ বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। সংস্কৃত নাট্য সাহিত্য জগতে একেই ভাস সমস্যা বলা হয়।
নাটকগুলি ভাস রচিত নয়
বার্নেট, জনসন প্রমূখ পন্ডিতগণ উক্ত নাটক গুলি ভাসের রচনা নয় বলে মনে করেন। তাঁরা নিম্নলিখিত যুক্তিগুলি অবতারণা করেছেন।
- প্রথমতঃ আবিষ্কৃত নাটকগুলির কোনটিতেই নাট্যকারের নাম নেই।
- দ্বিতীয়তঃ নাট্যশাস্ত্রের নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে।
- তৃতীয়তঃ কোন নাটকেরই প্রথমে নান্দীশ্লোক নেই।
- চতুর্থঃ স্বপ্নবাসবদত্তের যেসব উদ্ধৃতি অন্যত্র পাওয়া যায়, অধুনাপ্রাপ্ত স্বপ্নবাসবদত্ত নাটকে তা সর্বাংশে মেলেনা।
- পঞ্চমতঃ ‘শ্লোক সংগ্রহ’ গ্রন্থে ভাসের রচিত বলে যে সব শ্লোক উদ্ধৃত করা হয়েছে সেগুলি আবিষ্কৃত নাটক গুলিতে পাওয়া যায় না।
নাটকগুলি ভাসরই রচিত
আবিষ্কৃত নাটকগুলি সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী যে সকল যুক্তি উপস্থাপিত হয়েছে, সেগুলি সংখ্যায় খুবই অল্প। তবে উক্ত নাটকগুলি ভাসরই রচিত কিনা তা কীথ, টমাস প্রমুখ পন্ডিতগণ স্বীকার করেন। তাঁদের যুক্তিগুলি হল নিম্নরূপ-
- প্রথমতঃ আবিষ্কৃত নাটক গুলি একই স্থানে পাওয়া গেছে।
দ্বিতীয়তঃ প্রতিটি নাটকেই প্রস্তাবনায় নাট্যকার নিজের নাম গোপন রেখেছেন। - তৃতীয়তঃ প্রতিটি নাটকেরই ভাব-ভাষা, নাট্যভঙ্গি, রচনাশৈলী একই ধরনের।
- চতুর্থতঃ প্রতিটি নাটকেই প্রস্তাবনার পরিবর্তে স্থাপনা শব্দের প্রয়োগ হয়েছে।
- পঞ্চমতঃ সমস্ত নাটকেই একই ধরনের ভরতবাক্য পরিলক্ষিত হয়।
- ষষ্ঠতঃ আবিষ্কৃত প্রতিটি নাটকেই “নাদ্যন্তে ততঃ প্রবিশতি সূত্রধারঃ” কথা দিয়ে শুরু হয়েছে।
- সপ্তমতঃ কোনো নাটকেই পানিনির ব্যাকরণের নিয়ম অনুসৃত হয়নি।
- অষ্টমতঃ একই ধরনের নাম বা চরিত্র একাধিক নাটকে দেখা যায়।
- নবমতঃ প্রতিটি নাটকেই নাট্যশাস্ত্রের নির্দেশকে অমান্য করা হয়েছে।
- দশমতঃ বেশিরভাগ নাটকেই একই ধরনের নাট্যনির্দেশনা তথা দৃশ্য পরিবেশনা দেখা যায়।
উপসংহার
উল্লিখিত প্রমাণসমূহের উপর ভিত্তি করে বলা যেতে পারে সম্পূর্ণ নাটক চক্রটি একজন ব্যক্তিরই রচিত। কিন্তু কে সেই ব্যক্তি? রাজশেখরের সূক্তিমুক্তাবলীর একটি শ্লোকে স্পষ্ট উল্লেখিত হয়েছে নাটকগুলি ভাসরই রচিত।
ভাসনাটকচক্রেঽপি চ্ছেকৈঃ ক্ষিপ্তে পরীক্ষিতুম্।
স্বপ্নবাসবদত্তস্য দাহকোঽভূন্ন পাবকঃ ।।
এখন আবিষ্কৃত নাটক গুলির মধ্যে স্বপ্নবাসবদত্তা অন্যতম। সুতরাং আবিষ্কৃত ১৩টি নাটকেই ভাস রচনা করেছেন, এ কথা প্রমাণিত হয়।
ভাস সমস্যা থেকে জিজ্ঞাস্য
টি. গণপতি শাস্ত্রী।
13 টি।
কেরল অঞ্চলে।
ধন্যবাদ
আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈
আমদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে CLICK HERE👈
Nice
ধন্যবাদ