সংস্কৃত বাচ্যপ্রকরণ

এই অধ্যায়ে সংস্কৃত ব্যকরণের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাচ্যপ্রকরণ নিয়ে আলোচনা করবো। আমরা জানব সংস্কৃত ভাষায় বাচ্য কাকে বলে ও বাচ্য কতরকমের ও কী কী অর্থাৎ বাচ্যের শ্রেণীবিভাগ। সংস্কৃত বাচ্যপ্রকরণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকলে সংস্কৃতে অনুবাদ করা সম্ভব নয়। সংস্কৃত অনুবাদ শিক্ষার জন্য বাচ্য জানা আবশ্যক। সপ্তম, অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর , WBSSC(SLST) পরীক্ষার্থীদের এই বাচ্য কন্ঠস্থ করতে হবে।

সংস্কৃত বাচ্যপ্রকরণ

সংস্কৃত বাচ্যপ্রকরণ অষ্টম শ্রেণী এবং একাদশ, দ্বাদশ, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের অতি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

বাচ্য কাকে বলে

বাচ্য শব্দের অর্থ হল বক্তব্য বা অভিধেয় বিষয়। ভাষায় অর্থবহ পদগুলিকে বাক্যে পরিণত করে ভাব ব্যক্ত করা হয়। প্রকাশের কয়েকটি প্রসিদ্ধ ভঙ্গী বা রীতিনীতি আছে। তাকেই বাচ্য বলে। সংস্কৃত বাচ্যপ্রকরণ

বাচ্যের শ্রেণীবিভাগ

বাচ্য তিন প্রকার কর্তৃবাচ্য, কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্য। কর্মকর্তৃবাচ্য নামেও এক প্রকার বাচ্য আছে। অর্থাৎ সংস্কৃতে বাচ্য প্রধাতঃ চার প্রকার। যথা—

  • 1) কর্তৃবাচ্য,
  • 2) কর্মবাচ্য,
  • 3) ভাববাচ্য এবং
  • 4) কর্ম-কর্তৃবাচ্য

কর্তৃবাচ্য (Active voice) কাকে বলে

বাক্যে যে রীতিতে তিঙন্ত ক্রিয়ার প্রয়োগে কৰ্তার কথাই প্রধানভাবে বলা হয়, তা কর্তৃবাচ্য। এই জন্যই বলা হয়, কর্তৃবাচ্য বা অভিধেয়। কর্তৃবাচ্যে কর্তা ক্রিয়া যারা এইরূপে উক্ত হয় বলে এদেরকে উক্ত কর্তা বলে। কর্তৃবাচ্যের লক্ষণে বলা হয়েছে—

কর্তৃবাচ্য-প্রয়োগে তু প্রথমা কর্তৃকারকে।
দ্বিতীয়ান্তং ভবেৎ কর্ম কর্ত্রধীনং ক্রিয়াপদম্।

কর্তৃবাচ্যে কর্তৃকারকে প্রথমা বিভক্তি, কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি এবং ক্রিয়াপদ কর্তার অনুযায়ী হয় অর্থাৎ কর্তায় যে পুরুষের যে বচন, ক্রিয়াও সেই পুরুষের সেই বচন হয়। যেমন –

  • বালকাঃ চন্দ্রং পশ্যন্তি।
  • ত্বং গ্রামং গচ্ছসি।
  • মাতা চন্দ্ৰং পশ্যতি।
  • বালকৌ চন্দ্ৰং পশ্যতঃ।
  • তে চন্দ্ৰং পশ্যন্তি।
  • ত্বং চন্দ্ৰং পশ্যসি।
  • অহং চন্দ্ৰং পশ্যামি।
  • বয়ং চন্দ্ৰং পশ্যামঃ।

পরস্মৈপদী, আত্মনেপদী ও উভয়পদী ধাতুর সেই সেই রূপেই ব্যবহার হয়। কর্তৃবাচ্যে অতীত কাল অর্থে ক্তবতু এবং অকর্মক ধাতুতে ক্ত প্রত্যয়েরও ব্যবহার করা হয়। ঐ প্রত্যয়যুক্ত পদ কর্তৃবাচ্যে কর্তার বিশেষণ এবং কর্তা অনুসারেই লিঙ্গ, বিভক্তি হয়। যেমন –

  • আচার্যঃ গতবান্।
  • মাতা গতবতী।
  • কন্যা জাতা।
  • মিত্রম্ গতবৎ।

কর্মবাচ্য (Passive voice) কাকে বলে

যে বাক্যে কর্মের সঙ্গে ক্রিয়ার সম্বন্ধ থাকে, কর্মের কথাই প্রধান বক্তব্য বিষয় হয়, তাকে কর্মবাচ্য বলে। কর্মবাচ্যে কর্ম ক্রিয়া যারা এইরূপে উক্ত হয় বলে এদেরকে উক্ত কর্ম বলে। কর্মবাচ্যের লক্ষণে বলা হয়েছে—

কর্মবাচ্যপ্রয়োগে তু তৃতীয়া কর্তৃকারকে।
প্রথমান্তং ভবেৎ কর্ম কর্মাধীনং ক্রিয়াপদম্।

কর্মবাচ্যে কর্তৃকারকে তৃতীয়া বিভক্তি, কর্মকারকে প্রথমা বিভক্তি এবং ক্রিয়া কর্মের অনুযায়ী হয় অর্থাৎ কর্ম যে পুরুষের যে বচন, ক্রিয়াও সেই পুরুষের সেই বচন হয়। ধাতু সকর্মক হলে কর্মবাচ্যে প্রয়োগ করা চলে, নচেৎ নয়। যেমন –

  • তেন বৃক্ষঃ দৃশ্যতে।
  • তেন বৃক্ষাঃ দৃশ্যন্তে।
  • তেন যুবাং দৃশ্যেথে।

কর্মবাচ্যে সকল ধাতুই আত্মনেপনী হয়। লট্, লোট্, লঙ্ ও বিধিলিঙ্—এই চার বিভক্তিতে ধাতুর পূর্বে য আগম হয়। যেমন—

  • দৃশ্— দৃশ্ + য + তে = দৃশ্যতে।
  • গম্— গম্‌ + য+ তে = গম্যতে।
  • জ্ঞা—– জ্ঞা + য + তে = জ্ঞায়তে।

ভাববাচ্য (Verbal voice) কাকে বলে

যে বাক্যে ক্রিয়ার ঘটনার কথাই প্রধান বক্তব্য বিষয় অর্থাৎ ক্রিয়া যখন নিজেকেই প্রকাশ করে, তখন তাকে ভাববাচ্য বলে। ভাববাচ্যের লক্ষণে বলা হয়েছে—

ভাববাচ্যে কর্মাভাবস্তৃতীয়া কর্তৃকারকে।

প্রথম পুরুষস্যৈক বচনং স্যাৎ ক্রিয়াপদে ৷

কর্তা সেখানে প্রধান বক্তব্য নয় বলে অনুক্ত কর্তায় তৃতীয়া। কর্ম তো থাকেই না। কেবল ক্রিয়া নিত্য প্রথম পুরুষ একবচনে ব্যবহৃত হয়। তবে লট্ প্রভৃতি চার বিভক্তিতে ধাতুতে য-ফলা যোগ হয় এবং ধাতু আত্মনে পদী হয়। কেবল অকর্মক ধাতুর ক্ষেত্রেই ভাববাচ্য হয়। যেমন –

  • ময়া গম্যতে।
  • শিশুনা রুদ্যতে।
  • যুষ্মাভিঃ স্থীয়তে।

কর্মকর্তৃবাচ্য (Quasi-Passive voice) কাকে বলে

ক্রিয়া যখন কর্মের অন্তর্ভূত কর্তাকে প্রকাশ করে তখন তাহাকে কর্মকর্তৃবাচ্য বলে। কর্মকর্তৃবাচ্যের লক্ষণে বলা হয়েছে—

ক্রিয়মাণন্তু যৎ কর্ম স্বয়মের প্রসিধ্যতি।
সুকরৈঃ স্বৈর্গুণৈঃ কর্তুঃ কর্মকর্তেতি তদ্বিদুঃ৷৷

যে আরব্ধ কর্ম এত অনায়াসে সিদ্ধ হয় যে, তা যেন কর্তার অপেক্ষা না রেখে নিজেই সম্পন্ন হল বলে মনে হয়, তাকে কর্মকর্তা বলে। এই বাচ্যে কর্মকর্তায় প্রথমা এবং ক্রিয়া কর্মবাচ্যের ন্যায় গঠিত হয়ে কর্মকর্তাকে অনুসরণ করে। যেমন–

  • পচ্যতে ওদনঃ (স্বয়মেব)।
  • জীর্ঘ্যতে বস্ত্রম্ (স্বয়মেব)।
  • ছিদ্যতে কাষ্টম্ (স্বয়মেব)।
বাচ্যপ্রকরণ থেকে জিজ্ঞাস্য(FAQ)
1) বাচ্য কয়প্রকার ও কী কী?

চার প্রকার – কর্তৃবাচ্য, কর্মবাচ্য, ভাববাচ্য এবং কর্ম-কর্তৃবাচ্য।

2) কোন্ কর্তাকে উক্ত কর্তা বলে?

কর্তৃবাচ্যের কর্তাকে।

3) কোন্ কর্মকে উক্ত কর্ম বলে?

কর্মবাচ্যের কর্মকে।

Leave a Comment