সংস্কৃত ও বাংলা উভয় ভাষাতেই ণত্ব বিধান একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লেখার ক্ষেত্রে সঠিক বানান লিখতে হলে ণত্ব বিধানের জ্ঞান অবশ্যই থাকতে হবে। এই অধ্যায়ে ণত্ব বিধানের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা রইল। ণত্ব বিধান সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকলে সংস্কৃতে অনুবাদ করা সম্ভব নয়। সংস্কৃত অনুবাদ শিক্ষার জন্য ণত্ব বিধান জানা আবশ্যক। সপ্তম, অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর , WBSSC(SLST) পরীক্ষার্থীদের সংস্কৃত ণত্ব বিধান কন্ঠস্থ করতে হবে।
ণত্ব বিধান কাকে বলে
যে সকল নিয়ম দ্বারা দন্ত্য ন্ মূর্ধন্য ণ্ হয়, সেই সব নিয়মকে ণত্ব বিধান বলে।
ণত্ব বিধানের নিয়মাবলী
ণত্ব বিধানের কিছু নিয়মাবলী আছে, যেগুলি অনুধাবন করলে সঠিক বানান লেখা সম্ভব। সেইসব নিয়মগুলি হল–
1) রষাভ্যাং নো ণঃ সমানপদে অর্থাৎ ঋ, ঋ, র্, ষ্—এই চার বর্ণের কোন একটির পর একই পদে দন্ত্য ‘ন’ থাকলে মূর্ধন্য ণ হয়। যথা—
- ঋ—ঋণম্, ধাতৃণা
- র্—চতুর্ণাম, পূর্ণম্, বিস্তীর্ণম্
- ষ্—বিষ্ণুঃ, পুষ্ণাতি ইত্যাদি।
2) অট্ কপ্বাঙ্নুম্ব্যবায়েহপি অর্থাৎ ঋ, ৠ, র্, ষ্—এই চার বর্ণের কোন একটির পর স্বরবর্ণ, ক-বর্গ, প-বর্গ, ষ্, ব্ হ্ অনুস্বার,—এদের যে-কোন একটি অথবা একাধিক বর্ণ ব্যবধান থাকলেও একপদস্থিত দস্ত্য ন মূর্ধা ণ্ হয়। যথা—
- স্বরবর্ণ— করণম্,হরিণা, গুরূণাম্
- ক-বর্গ—অর্কেণ , মূর্খেণ
- প-বর্গ—দর্পেণ, রেফেণ
- য— রয়েণ
- ব —গর্বেণ
- হ—গ্রহাণাম্
- অনুস্বার— বৃংহণম্
এ ছাড়া, অন্য বর্ণ ব্যবধান থাকলে দন্ত্য ন, মূর্ধন্য ণ্ হয় না। যথা—অৰ্চনা, মূর্ছনা, অর্জন, কিরীটেন, আর্তেন, অর্থেন, বিমর্দেন, বিরলেন, স্পর্শেন, রসেন ইত্যাদি।
3) ন পদান্তস্য অর্থাৎ পদের অন্তস্থিত দন্ত্য ন্ মূর্ধন্য ণ্ হয় না। যথা— বৃক্ষান্,
নরান্, হরীন্, গুরুন্, ভ্রাতৃন্, গ্রহান্, মৃগন্, বৃষান্, কুর্বন্, হরন্ ইত্যাদি।
4) ন্ ভিন্ন ত-বর্গ যুক্ত এবং প ও ভ যুক্ত দন্ত্য ন্ মূর্ধন্য ণ্ হয় না। যথা—কৃন্ততি, গ্রন্থনম্, বৃন্দম্, তৃপ্নোতি ইত্যাদি।
5) ঋ, ঋ, র, ষ—এই বর্ণগুলির পরস্থিত না হলেও ট-বর্গের পূর্বস্থিত দন্ত্য ‘ন্’ মূর্ধন্য ণ হয় যথা—কণ্টকঃ, কন্ঠঃ, দণ্ডঃ ইত্যাদি ।
6) অহ্নোহদন্তাৎ অর্থাৎ সমাসে প্র, পূর্ব, অপর প্রভৃতি শব্দের পরবর্তী অহ্ন শব্দের দন্ত্য ন মূর্ধন্য হয়। যথা – প্রাহ্ণঃ, পূর্বাহ্ণঃ, অপরাহ্ণঃ।
7) বাহনমাহিতাৎ অর্থাৎ সমাসে বহনীয় বাচক পূর্বপদস্থিত নিমিত্তের পরবর্তী বাহন শব্দের দন্ত্য ন মূর্ধন্য ণ হয়। যথা – ইক্ষুবাহণম্, শরবাহণম্
8) একাজুত্তরপদে ণঃ অর্থাৎ সমাসে পূর্বপদস্থিত নিমিত্তের পরবর্তী একস্বর নিষ্পন্ন শব্দ কিংবা পরপদ ক-বর্গ যুক্ত থাকলে দন্ত্য ন্ নিত্য মূর্ধন্য ণ্ হয়। যথা – বৃত্রহণৌ, বৃত্রহণঃ
9) অগ্র, গ্রাম শব্দের পরবর্তী নী ধাতুর দন্ত্য ন্ মূর্ধন্য ণ্ হয়। যথা— অগ্রণী, গ্রামীনঃ। পরবর্তী অয়ন শব্দের দন্ত্য ন্ অনুরূপভাবে মূর্ধন্য ণ্ হয়। যথা— পরায়ণঃ, চান্দ্রায়ণম্।
10) উপসর্গাদসমাসেঽপি ণোপদেশস্য অর্থাৎ প্র, পরা, পরি, নির—এই চারিটি উপসর্গের পর ন-কারাদি নদ, নম্, নশ, নী প্রভৃতি কয়েকটি ধাতুর দন্ত্য ন মূর্ধন্য ণ হয়।যথা—
প্রণদতি, প্রণয়ঃ, প্রণামঃ, পরিণামঃ, প্রণাশঃ
কিন্তু ‘নশেঃ যান্তস্য‘ সূত্র অনুসারে এখানে দন্ত্য ন মূর্ধন্য ণ হয় নাই।যথা— প্রনষ্টঃ।
11) সংস্কৃত শব্দরূপে তৃতীয়ার একবচনে ইন বা না যোগ হয়। ষষ্ঠীর বহুবচনে নাম্ যোগ। তাই ণত্বের নিমিত্ত থাকিলে মূর্ধন্য ণ হইবে—নরেণ, মৃগেণ, নরাণাম্, মৃগাণাম্। কিন্তু মুনীনাম্, সাধূনাম্।
ণত্ব বিধান থেকে জিজ্ঞাস্য
যে সকল নিয়ম দ্বারা দন্ত্য ন্ মূর্ধন্য ণ্ হয়, সেই সব নিয়মকে ণত্ব বিধান বলে।
অগ্রণী ।
অপরাহ্ণঃ ।
ধন্যবাদ
আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈