সংস্কৃত দ্বন্দ্ব সমাস

এই অধ্যায়ে আমরা শিখব সংস্কৃত ব্যাকরণের এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কৃত দ্বন্দ্ব সমাস । সংস্কৃত দ্বন্দ্ব সমাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকলে সংস্কৃতে অনুবাদ করা সম্ভব নয়। সংস্কৃত অনুবাদ শিক্ষার জন্য দ্বন্দ্ব সমাস জানা আবশ্যক। সপ্তম, অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর , WBSSC(SLST) পরীক্ষার্থীদের দ্বন্দ্ব সমাস কন্ঠস্থ করতে হবে।

আমরা জানব সংস্কৃত ভাষায় দ্বন্দ্ব সমাস কাকে বলে ও দ্বন্দ্ব সমাস নির্ণয়ের বিভিন্ন নিয়ম ও সূত্র। এখানে আপনাদের সাহায্যার্থে দ্বন্দ্ব সমাসের পুরো বিষয়টিকে খুব সহজভাবে তুলে ধরতে চাইছি, যাতে খুব সহজে আপনাদের বোধগম্য হয়। সংস্কৃত দ্বন্দ্ব সমাস

দ্বন্দ্ব সমাস কাকে বলে

উভয়পদার্থ প্রধানো দ্বন্দ্ব অর্থাৎ যে সমাসে উভয় পদের অর্থ প্রধান রূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন—

রামশ্চ লক্ষ্মণশ্চ = রামলক্ষ্মণৌ
এখানে ‘রাম’ ও ‘লক্ষ্মণ’ উভয় পদের অর্থই প্রধান রূপে প্রতীয়মান হয়েছে।

আবার অন্যভাবে দ্বন্দ্ব সমাসের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
চার্থে দ্বন্দ্ব অর্থাৎ চ এর অর্থে একাধিক প্রথমান্ত সুবন্ত পদের পরস্পর সমাস হয়, এই সমাসকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। চ এর অর্থ চারটি। যথা — সমুচ্চয়, অন্বাচ্চয়, ইতরেতরযোগ ও সমাহার।

  • সমুচ্চয় :- পরস্পর নিরপেক্ষ একাধিক সুবন্ত পদের এক বিষয়ক অন্বয়কে সমুচ্চয় বলা হয়। যেমন—ঈশ্বরং গুরুং চ ভজস্ব।
  • অন্বচ্চয় :- প্রধান বিষয়ের সঙ্গে আনুষঙ্গিক বিষয়ের যে একত্বসূচক অন্বয় তাকে অনন্যায় বলে। যেমন— ভিক্ষাম্ অট গাং চ আনয়

সমুচ্চয় ও অন্বাচ্চয় একার্থীভাব রূপ সামর্থ্য থাকে না, এজন্য এদুটো সমাস হতে পারে না। ইতরেতরযোগ ও সমাহারেরই দ্বন্দ্ব সমাস হয়। সুতরাং দ্বন্দ্ব সমাস দুই প্রকার।

ইতরেতর দ্বন্দ্ব সমাস কাকে বলে

পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত একাধিক সুবন্ত পদ একই ক্রিয়ার সঙ্গে অন্বিত হলে, তাকে ইতরেতর দ্বন্দ্ব সমাস বলে। এই সমাসে প্রত্যেক সমস্যমান পদসমূহের অর্থ প্রধান বলে, সমাসবদ্ধ পদে সমস্যমান পদসমূহের মিলিত সংখ্যা অনুসারে বচন হয় এবং পরপদের লিঙ্গ অনুসারে সমাসবদ্ধ পদের লিঙ্গ হয়। যেমন—

  • হরিশ্চ হরশ্চ = হরিহরৌ
  • কন্দশ্চ মলং চ ফলং চ = কন্দমূলফলানি
  • দারাশ্চ পতিশ্চ = দারাপতী
  • বাক্ চ মনশ্চ = বাঙ্মনসে

ইতরেতর দ্বন্দ্ব সমাসের কয়েকটি বিশেষ নিয়ম

(1) আনঙ্ ঋতে দ্বন্দ্বে অর্থাৎ ঋ-কারান্ত পদসমূহের দ্বন্দ্ব সমাসে পরস্পর বিদ্যাসম্বন্ধ বা গোত্রসম্বন্ধ থাকলে পূর্ব পদের ঋ-কার স্থানে আনঙ্ হয়। আনঙ্ এর আ থাকে। যেমন—

  • মাতা চ পিতা চ = মাতাপিতরৌ, পিতরৌ
  • হোতা চ পোতা চ = হোতাপোতারৌ

2) দেবতাদ্বন্দ্বে চ অর্থাৎ দেবতা বাচক দ্বন্দ্ব সমাসে পূর্ব পদের অন্ত্য বর্ণ স্থানে আনঙ্ হয়। যেমন—

  • ইন্দ্রশ্চ বরুণশ্চ = ইন্দ্রাবরুণৌ
  • মিত্রশ্চ বরুণশ্চ = মিত্রাবরুণৌ

3) ঈদগ্নেঃ সোমবরুণয়োঃ অর্থাৎ দেবতাদ্বন্দ্বে সোম ও বরুণ শব্দের সঙ্গে সমাসে অগ্নি শব্দের হ্রস্ব ই-কার দীর্ঘ ঈ-কার হয়। যেমন—

  • অগ্নিশ্চ সোমশ্চ = অগ্নীষোমৌ
  • অগ্নিশ্চ বরুণশ্চ = অগ্নীবরুণৌ

4) দিবো দ্যাবা, দিবসশ্চ পৃথিব্যাম্ অর্থাৎ দেবতাদ্বন্দ্বে পূর্বপদ দিব্ স্থানে দ্যাবা হয়, কিন্তু পৃথিবী শব্দ পরে থাকলে দিব্ স্থানে দ্যাবা ও দিবস্ হয়। যথা—

  • দ্যৌশ্চ ভূমিশ্চ = দ্যাবাভূমী
  • দ্যৌশ্চ পৃথিবী চ = দ্যাবাপৃথিব্যৌ, দিবস্পৃথিব্যৌ

সমাহার দ্বন্দ্ব সমাস কাকে বলে

বস্তুগুলির সমূহ বোঝালে পদদ্বয়ের সমাহার দ্বন্দ্ব সমাস হয়। যেমন—

  • পাণী চ পাদৌ চ = পাণিপাদম্
  • অহয়শ্চ নকুলাশ্চ = অহিনকুলম্

সমাহার দ্বন্দ্ব সমাসের কয়েকটি বিশেষ নিয়ম

(1) স নপুংসকম্ অর্থাৎ সমাহার বোঝাতে দ্বন্দ্ব সমাস ক্লীবলিঙ্গ হয়। যেমন—

  • পাণী চ পাদৌ চ = পাণিপাদম্
  • অহয়শ্চ নকুলাশ্চ = অহিনকুলম্

2) দ্বন্দ্বশ্চ প্রাণিতুর্যসেনাঙ্গানাম্ অর্থাৎ প্রাণী, তুর্য(বাদ্যকার) ও সেনার অঙ্গ বোঝালে সমাহার দ্বন্দ্ব হয়। যেমন—

প্রাণীর দুটি অঙ্গবাচক

  • পাণী চ পাদৌ চ = পাণিপাদম্
  • করৌ চ চরণৌ চ = করচরণম্
  • হস্তৌ চ পাদৌ চ = হস্তপাদম্
  • নখাশ্চ নয়নে চ = নখনয়নম্
  • দন্তাশ্চ ওষ্ঠৌ চ = দন্তৌষ্ঠম্

সেনা বাচক

  • ধনুংষি চ শরাশ্চ = ধনুঃশরম্
  • রথিকাশ্চ অশ্বারোহাশ্চ = রথিকাশ্বরোহম্

তুর্য বাচক

  • মার্দঙ্গিকাশ্চ পাণবিকাশ্চ = মার্দঙ্গিকপাণবিকম্

3) জাতিরপ্রাণিনাম্ অর্থাৎ প্রাণী বাদে অন্য জাতিবাচক শব্দে সমাহার দ্বন্দ্ব হয়। যেমন—

  • দ্রুমাশ্চ শৈলাশ্চ = দ্রুমশৈলম্
  • আরা চ শস্ত্রী চ = আরাশস্ত্রি

4) যেষাং চ বিরোধঃ শাশ্বতিকঃ অর্থাৎ যেসকল জন্তুর চিরবিরোধ, তাদের সমাহার দ্বন্দ্ব হয়। যেমন—

  • অহয়শ্চ নকুলাশ্চ = অহিনকুলম্
  • মার্জারাশ্চ মূষিকাশ্চ = মার্জারমূষিকম্
  • শ্বানশ্চ শৃগালাশ্চ = শ্বশৃগালম্

5) বিশিষ্টলিঙ্গে নদীদেশোহগ্রামঃ অর্থাৎ লিঙ্গ আলাদা হলে নদীবাচক ও দেশবাচক শব্দে সমাহার দ্বন্দ্ব সমাস হয়। যেমন

  • গঙ্গা চ শোনশ্চ = গঙ্গাশোনম্
  • গঙ্গা চ ব্রহ্মপুত্রশ্চ = গঙ্গাব্রহ্মপুত্রম্
  • কুরবশ্চ কুরুক্ষেত্রং চ = কুরুক্ষেত্রং
  • মথুরা চ পাটলিপুত্রশ্চ = মথুরাপাটলিপুত্রম্

6) ক্ষুদ্রজন্তবঃ অর্থাৎ ক্ষুদ্রজন্তু বাচক শব্দের সমাহার দ্বন্দ্ব সমাস হয়। যেমন-

  • দংশাশ্চ মশকাশ্চ = দংশমশকম্
  • যূকাশ্চ লিক্ষাশ্চ = যূকালিক্ষম্

7) গবাশ্বপ্রভৃতীনি চ অর্থাৎ গবাশ্ব প্রভৃতি শব্দে সমাহার দ্বন্দ্ব সমাস হয়। যেমন –

  • গাবশ্চ অশ্বাশ্চ = গবাশ্বম্
  • অজাশ্চ অবিকাশ্চ = অজাবিকম্
  • মাংসঞ্চ শোণিতঞ্চ = মাংসশোণিতম্
  • কুব্জাশ্চ বামনাশ্চ = কুব্জবামনম্

অনুরূপ আলোচনা

সমাসগুলি সম্পর্কে জানতে Link এ Click করুন

দ্বন্দ্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য
1) দ্বন্দ্ব সমাসের মূল বিষয় কি?

উভয় পদের প্রাধান্য।

2) “চার্থে দ্বন্দ্ব” চ এর কয়টি অর্থ?

চারটি।

3) দ্বন্দ্ব সমাস কয়প্রকার ও কি কি?

দুই প্রকার । যথা – ইতরেতর ও সমাহার দ্বন্দ্ব সমাস।

ধন্যবাদ

আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈

আমদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে CLICK HERE👈

Leave a Comment