সংস্কৃত সমাস প্রকরণ

এই অধ্যায়ে আমরা শিখব সংস্কৃত ব্যাকরণের এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কৃত সমাস প্রকরণ । সংস্কৃত সমাস প্রকরণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকলে সংস্কৃতে অনুবাদ করা সম্ভব নয়। সংস্কৃত অনুবাদ শিক্ষার জন্য সমাস প্রকরণ জানা আবশ্যক। সপ্তম, অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর , WBSSC(SLST) পরীক্ষার্থীদের সমাস প্রকরণ কন্ঠস্থ করতে হবে।

আমরা জানব সংস্কৃত ভাষায় সমাস কাকে বলে ও সমাস কতরকমের ও কী কী অর্থাৎ সমাসের শ্রেণীবিভাগ, সমাস নির্ণয়ের বিভিন্ন নিয়ম ও সূত্র। এখানে আপনাদের সাহায্যার্থে সমাসের পুরো বিষয়টিকে খুব সহজভাবে তুলে ধরতে চাইছি, যাতে খুব সহজে আপনাদের বোধগম্য হয়। সংস্কৃত সমাস প্রকরণ।

সমাস কাকে বলে

সম্ পূর্বক দিবাদিগণীয় অস্ ধাতুর ঘঞ্ প্রত্যয় করে সমাস শব্দটি নিষ্পন্ন। সমাস শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ সংক্ষেপ। অর্থাৎ একাধিক পদ মিলে একটি পদে পরিণত হাওয়াকে সমাস বলে। সংস্কৃতে সমাসের লক্ষণ হল – একপদীভাবঃ সমাসঃ ।

সমর্থঃ পদবিধিঃ

সমর্থ অর্থাৎ বিগ্রহবাক্যের অর্থ প্রকাশ করার শক্তিযুক্ত। সমাসের ক্ষেত্রে পদবিধি বলতে দুই বা ততোধিক পদসংক্রান্ত বিধিকেই বুঝতে হবে।

যেমন – রাজ্ঞঃ পুরুষঃ। এখানে ‘রাজ্ঞঃ’ এই ষষ্ঠ্যন্ত পদটির সঙ্গে ‘পুরুষঃ’ এই প্রথমান্ত পদটির স্ব-স্বামিভাব (প্রভু-ভৃত্য ) সম্বন্ধযুক্ত ।
‘রাজ্ঞঃ পুরুষঃ’ বিগ্রহবাক্যে যে পদগুলো পরস্পর পৃথক অর্থে প্রযুক্ত ছিল, তারাই বর্তমানে একার্থীভাবে পরিণত হয়ে সম্মিলিত অর্থ প্রকাশ করল। অতএব একার্থীভাব বলতে সেই শক্তিকেই বোঝায় যার দ্বারা ব্যপেক্ষা সম্বন্ধযুক্ত পদসমূহ সম্মিলিত একটি বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। সমাসবদ্ধ পদ রচিত হওয়ার পর ‘রাজপুরুষঃ’ এই শব্দটি সম্মিলিত একটি অর্থ প্রকাশ করছে। ‘রাজ্ঞঃ’ ও ‘পুরুষঃ’ পৃথক বিভক্তি যুক্ত এই দুটি পদের পৃথক অর্থ আর থাকল না। সংস্কৃত সমাস প্রকরণ

সমাসের কয়েকটি পারিভাষিক শব্দ

সমাসবদ্ধ পদ :- সমস্যমান পদগুলোর মিলিত একপদকে সমাসবদ্ধ পদ বলে। ‘রাজপুরুষঃ’ হল সমাসবদ্ধ পদ।

ব্যাসবাক্য:- সমাসবদ্ধ পদের অর্থটি বোঝাবার জন্য যে পদগুলো প্রয়োগ করা হয়, সেই পদগুলোকে ‘ব্যাসবাক্য’ বা ‘বিগ্রহবাক্য’ বলে। রাজ্ঞঃ পুরুষঃ হল ব্যাসবাক্য।

সমস্যমান পদ :- ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্যের প্রত্যেকটি পদকে সমস্যমান পদ বলে। ‘রাজ্ঞঃ’ ও ‘পুরুষঃ’ পদ দুটি হল সমস্যমান পদ।

পূর্ব পদ :- ব্যাসবাক্যের মধ্যে যে দুটি পদ নিয়ে সমাস হয়, সমস্ত পদে যে ক্রমে বসে সেই ক্রম অনুসারে বসে, তাদের প্রথমটিকে পূর্ব পদ বলে।

উত্তর পদ বা পরপদ :- ব্যাসবাক্যের মধ্যে যে দুটি পদ নিয়ে সমাস হয়, সমস্ত পদে যে ক্রমে বসে সেই ক্রম অনুসারে বসে, তাদের পরেরটিকে উত্তর পদ বা পরপদ বলে।

সমাসের শ্রেণীবিভাগ

সমাসশ্চতুর্বিধঃ ইতি তু প্রায়োবাদঃ

সমাস চারপ্রকার – প্রায়শঃই বলা হলেও ঐ বিভাগ যুক্তিসম্মত নয়। কেননা এই চারপ্রকার সমাসের অতিরিক্ত পাণিনি ” সহসুপা” এই সূত্র অনুসারে অতিরিক্ত একটি সমাসের ভেদ স্বীকার করেছেন। অতএব সমাস পাঁচপ্রকার এইরূপ বলাই সমীচীন।

পূর্বপদার্থপ্রধানঃ অব্যয়ীভাবঃ, উত্তরপদার্থপ্রধানঃ তৎপুরুষঃ, অন্যপদার্থপ্রধানঃ বহুব্রীহিঃ, এবং উভয়পদার্থপ্রধানো দ্বন্দ্বঃ – এইভাবে যে সমাসের স্বরূপ নির্ণয় প্রাচীনেরা করে গেছেন তাও প্রায়শঃ প্রচলিত উক্তি বলে ধরতে হবে। অর্থাৎ সর্বতোভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। ‘উন্নতগঙ্গম্’ প্রভৃতি অবায়ীভাবের উদাহরণ, ‘অতিমালঃ’ প্রভৃতি তৎপুরুষে, ‘দ্বিত্রাঃ’ প্রভৃতি বহুব্রীহি সমাসে এবং ‘দন্তৌষ্ঠম্” প্রভৃতি দ্বন্দ্ব বলে স্বীকৃত উক্ত স্বরূপের ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়।

  • প্রথম উদাহরণে উন্নত্তগঙ্গম্ একটি সংজ্ঞা , তাই অন্য অর্থ প্রধান।
  • দ্বিতীয় উদাহরণে অতিমালঃ তৎপুরুষ সমাস হলেও উত্তর পদার্থ প্রধান নয়, পূর্ব পদের অর্থ প্রধান।
  • তৃতীয় উদাহরণে দ্বিত্রাঃ বহুব্রীহির অন্তর্ভুক্ত হলেও প্রকৃতপক্ষে উভয়পদার্থ প্রধান।
  • চতুর্থ উদাহরণে দন্তৌষ্ঠম্ দ্বন্দ্ব সমাসভুক্ত হলেও উভয়পদার্থ প্রধান নয়, সমহারের অর্থই প্রধান।

একপ্রকার বিশিষ্ট তৎপুরুষ সমাসকেই ‘কর্মধারয়’ সমাস নাম দেওয়া হয়েছে। আবার, একপ্রকার বিশিষ্ট কর্মধারয় সমাসকে “দ্বিগু’ সমাস নাম দেওয়া হয়েছে। বিশেষ্য ও বিশেষণ অথবা দুটি বিশেষণ পদের সমাস হলে এবং পরপদের অর্থের প্রাধান্য হলে কর্মধারয় সমাস হয়। কর্মধারয় সমাসেরই পূর্বপদে যদি সংখ্যাবাচক শব্দ থাকে, তাহলে তাকে বলে দ্বিগু সমাস। অর্থাৎ সেদিক দিয়ে সমাস ছয় প্রকার। যথা—

  1. অব্যয়ীভাব সমাস👈
  2. তৎপুরুষ সমাস👈
  3. বহুব্রীহি সমাস👈
  4. দ্বন্দ্ব সমাস👈
  5. কর্মধারয় সমাস এবং 👈
  6. দ্বিগু সমাস👈

সংস্কৃত ব্যাকরণে আরেকভাবেও সমাসের শ্রেনীবিভাগ করা হয়েছে। সেখানে সমাসের ছয়টি প্রকার নিম্নলিখিতভাবে লক্ষ্য করা যায় :—

সুপাং সুপা তিঙা নাম্না ধাতুনাথ তিঙাং তিঙা।

সুবন্তেনেতি বিজ্ঞেয়ঃ সমাসঃ ষড়্বিধো বুধৈঃ। ।

  1. সুপের সঙ্গে সুপের — রাজপুরুষঃ
  2. সুপের সঙ্গে তিঙের —পর্যভূষয়ৎ
  3. নামের সঙ্গে সুপের—কুম্ভকারঃ
  4. ধাতুর সঙ্গে সুপের—কটপ্রূঃ, অজস্রম্
  5. তিঙের সঙ্গে তিঙের—পিবতখাদতা
  6. সুপের সঙ্গে তিঙের—কৃন্তবিচক্ষণা

অনুরূপ আলোচনা

সমাসগুলি সম্পর্কে জানতে Link এ Click করুন

সমাস প্রকরণ থেকে জিজ্ঞাস্য
1) সমাস শব্দের অর্থ কী?

সংক্ষেপ।

2) সমাস শব্দের ব্যুত্পত্তি কী?

সম্-অস্ (দিবাদি) + ঘঞ্ ।

3) সমাস কয় প্রকার ?

ছয়প্রকার।

ধন্যবাদ

আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈

আমদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে CLICK HERE👈 

Leave a Comment