এই অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয় প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদ চর্চা । প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষে আয়ুর্বেদ চর্চা প্রচলিত হয়েছে। এখানে প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদ চর্চা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো, বিষয়ে আলোচনা করব। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদ চর্চা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল। এই বিষয়টি উচ্চমাধ্যমিক 2025 এর জন্য Suggestive দেওয়া হয়েছে।
বহু প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষে আয়ুর্বেদ চর্চা প্রচলিত হয়েছে। প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল চরকসংহিতা, সুশ্রুতসংহিতা, ভেলসংহিতা, অষ্টাঙ্গসংগ্রহ, অষ্টাঙ্গহৃদয়, রসরত্নসমুচ্চয়, চিকিৎসাসার সংগ্রহ, জীবকতন্ত্র প্রভৃতি। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদ চর্চা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল।
গ্রন্থ | গ্রন্থকার |
চরকসংহিতা | চরক |
সুশ্রুতসংহিতা | সুশ্রুত |
ভেলসংহিতা | ভেল |
অষ্টাঙ্গসংগ্রহ | বাগভট |
প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদ চর্চা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো
প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদ চর্চা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো, দ্বাদশ শ্রেণী ছাড়াও স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষে আয়ুর্বেদ চর্চা প্রচলিত হয়েছে। আয়ুর্বেদশাস্ত্র পাঠ করলে আয়ু সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা যায়। যেমন জীবন স্বল্পায়ু না দীর্ঘায়ু হবে, রোগ মুক্ত জীবন, স্বাস্থ্য কীভাবে বজায় রাখা যায় ইত্যাদি। কথিত আছে, যে প্রজাপতি ব্রহ্মা প্রজা সৃষ্টি করার পূর্বে এক লক্ষ শ্লোক ও এক হাজার অধ্যায়ে ‘ব্রহ্মাসংহিতা’ নামে একটি আয়ুর্বেদ শাস্ত্র রচনা করেছিলেন। পরবর্তীকালে ব্রহ্মা তাঁর সৃষ্ট জীবকুলকে স্বপ্নায়ু ও স্বল্পধী দেখে সেই ব্রহ্মসংহিতাকে অষ্টাঙ্গে বিভক্ত করে অষ্টাঙ্গ আয়ুর্বেদ সৃষ্টি করেন। এই শাস্ত্র সম্পর্কে ব্রহ্মার কাছ থেকে বিষ্ণু, শংকর, সূর্য, দক্ষপ্রজাপতি শিক্ষালাভ করেছিলেন। আবার দক্ষপ্রজাপতির কাছ থেকে অশ্বিনীকুমারদ্বয় এবং তাঁর কাছ থেকে ইন্দ্র শিক্ষা নিয়েছিলেন। এরপর ভরদ্বাজ, তাঁর কাছ থেকে আত্রেয়, আবার আত্রেয় থেকে অগ্নিবেশ, পরাশর, ক্ষারপাণি প্রভৃতি ঋষিগণ শিক্ষা নিয়েছিলেন।
আয়ুর্বেদ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ
আয়ুর্বেদ শব্দটিতে দুটি শব্দ আছে। ‘আয়ু’ এবং ‘বেদ‘। ‘আয়ু’ শব্দের অর্থ জীবন আর ‘বেদ’ শব্দের অর্থ জ্ঞান বা বিদ্যা অর্থাৎ আয়ুর্বেদ শব্দের পুরো অর্থ হল জীবনবিজ্ঞান বা জীববিদ্যা। যে জ্ঞানের মাধ্যমে জীবের হিত সাধন হয়, তাকে আয়ুর্বেদ বা জীববিদ্যা বলা হয়। আয়ুর্বেদ চিকিৎসা হলো মূলত ভেষজ বা উদ্ভিদের মাধ্যমে চিকিৎসা। অথর্ববেদের যে অংশে চিকিৎসা বিদ্যা বর্ণিত আছে তাই আয়ুর্বেদ। প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে ভারতবর্ষেই এই চিকিৎসা পদ্ধতির উৎপত্তি হয়।
অষ্টাঙ্গ আয়ুর্বেদ
অষ্টাঙ্গ আয়ুর্বেদের আটটি অঙ্গ বা তন্ত্র রয়েছে। তা হল-
- (১) শল্য,
- (২) শলাকা,
- (৩) কায়চিকিৎসা,
- (৪) ভূতবিদ্যা,
- (৫) কৌমার ভৃত্য,
- (৬) অগদ,
- (৭) রসায়ন এবং
- (৮) বাজীকরণ।
আয়ুর্বেদশাস্ত্রের আটটি সম্প্রদায়
আয়ুর্বেদশাস্ত্রের কলেবর বিস্তৃত। তাই তন্ত্রকে অবলম্বন করে আটটি সম্প্রদায় গড়ে উঠেছে। তা হল –
- (১) আত্রেয়,
- (২) ধন্বন্তরি
- (৩) শালাক্য,
- (৪) ভূতবিদ্যা,
- (৫) কৌমার ভৃত্য,
- (৬) অগদতান্ত্রিক,
- (৭) রসায়ন তান্ত্রিক এবং
- (৮) বাজীকরণ তান্ত্রিক সম্প্রদায়।
আয়ুর্বেদের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ
আয়ুর্বেদের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল-
চরকসংহিতা – এটির প্রকৃত রচয়িতা অগ্নিবেশ এটি বহুলাংশে নষ্ট হয়ে গেলে ভগবান শেষনাগ চরকরূপে আবির্ভূত হয়ে অগ্নিবেশ তন্ত্রটিকে সংস্কার করেন। চরকের নামানুসারে গ্রন্থটির নাম হয় চরকসংহিতা। তবে এই গ্রন্থটিও পরবর্তীকালে দৃঢ়বল কর্তৃক সংস্কার করা হয়। তাই চরকসংহিতার রচয়িতা একাধিক।
সুশ্রুতসংহিতা – ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্রের অপর এক মহান শিক্ষাগুরু ছিলেন সুশ্রুত। সেই সুদূর নবম ও দশম শতাব্দীতে তাঁর খ্যাতি ভারতকে অতিক্রম করে সুদূর অঞ্চলে পরিব্যাপ্ত হয়েছিল। ধন্বন্তরির দ্বাদশ শিষ্যের অন্যতম ছিলেন সুশ্রুত। সুশ্রুতের নামানুসারে ‘সুশ্রুত সংহিতা”। এরূপ গ্রন্থের নাম হয়েছে বলে মনে হয়। নাগার্জুনের দ্বারা সংস্কৃত গ্রন্থটি ‘সুশ্রুত সংহিতা’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে বলে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের গবেষকরা মনে করেন। এটি শল্যবিদ্যার শাস্ত্র ।
ভেলসংহিতা – ভেলসংহিতা হল একটি চিকিৎসা গ্রন্থ। গ্রন্থটি মূলত ঋষি আত্রেয় এবং তাঁর শিষ্য ভেলার কথোপকথনের আকারে রচিত।
এছাড়াও রয়েছে, অষ্টাঙ্গসংগ্রহ, অষ্টাঙ্গহৃদয়, রসরত্নসমুচ্চয়, চিকিৎসাসার সংগ্রহ, জীবকতন্ত্র প্রভৃতি।
প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদ চর্চা থেকে জিজ্ঞাস্য
চরকসংহিতা।
চিকিৎসা বিষয়ক।
অথর্ববেদে।
ধন্যবাদ
আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈
আমদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে CLICK HERE👈