বৈদিক সাহিত্যের SAQ প্রশ্নোত্তর

বৈদিক সাহিত্যের SAQ প্রশ্নোত্তর একাদশ শ্রেণীর SEMESTER – 2 পাঠ্য হিসেবে নির্দিষ্ট। বৈদিক সাহিত্য – যজুর্বেদ, অথর্ববেদ ও বেদাঙ্গ(সংক্ষিপ্ত পরিচয়) একাদশ শ্রেণীর SEMESTER – 2 পাঠ্য হিসেবে নির্দিষ্ট। বেদের প্রতিটি SAQ প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হল।

বৈদিক সাহিত্যের SAQ প্রশ্নোত্তর জানার আগে জানতে হবে। বেদ ভারতীয় ঐতিহ্য তথা বিশ্বমানবের সংস্কৃতিধারার প্রাচীনতম জীবন্ত নিদর্শন। ভারতীয় সংস্কৃতির উৎস, বিশ্বমানবের চিরন্তন জ্ঞান ভান্ডার। বেদ বিশ্বের প্রাচীনতম গ্রন্থ। ‘বেদ’ শব্দটি বিদ্‌-ধাতু হতে নিষ্পন্ন। বিদ্ + অচ্ = বেদ। ‘বেদ’ মানে জ্ঞান, পরমজ্ঞান। প্রত্যক্ষ, অনুমান প্রভৃতি প্রমাণ দ্বারা আমাদের যে জ্ঞান জন্মে তা পার্থিব জ্ঞান চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয় সাহায্যে যথাক্রমে রূপ, শব্দ, গন্ধ, রগ ও স্পর্শের যে জ্ঞান হয় তা ইন্দ্রিয় জ্ঞান। এই সকল প্রমাণ বা জ্ঞানেন্দ্রিয় আমাদের অভীপ্রিয় জ্ঞান দান করতে পারে না। নয়ন, শ্রবণ, প্রভৃতি ইন্দ্রিয় ও মানবের বাক্যমন যে রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না সেই অতীন্দ্রিয় পরমজ্ঞান আমরা ‘বেদ‘ হতে লাভ করতে পারি।

বেদ ব্রাহ্মণ আরণ্যকউপনিষদ
ঋক্ঐতরেয় , কৌষীতকি বা সাংখ্যায়নঐতরেয় , কৌষীতকি বা সাংখ্যায়নঐতরেয় , কৌষীতকি বা সাংখ্যায়ন
সামতাণ্ডা বা পঞ্চবিংশ, যড়বিংশ, ছান্দোগ্যছান্দোগ্যছান্দোগ্য, কেনোপনিষদ
যজুঃকৃষ্ণযজুর্বেদ
তৈত্তিরীয়
শুক্ল যজুর্বেদ
শতপথ
কৃষ্ণযজুর্বেদ
তৈত্তিরীয়
শুক্ল যজুর্বেদ
বৃহদারণ্যক
কৃষ্ণযজুর্বেদ
কঠ, তৈত্তিরীয়, শ্বেতাশ্বতর
শুক্ল যজুর্বেদ
বৃহদারণ্যক, ঈশোপনিষদ
অথর্বগোপথনেইপ্রশ্ন, মুন্ডক, মাণ্ডুক্য

SAQ প্রশ্ন এবং উত্তর

বৈদিক সাহিত্যের SAQ প্রশ্নোত্তর গুলি নিম্নে দেওয়া হল।

1) বেদ কাকে বলে ?
উত্তর :- বেদ শব্দের অর্থ জ্ঞান । সেই অতিন্দ্রীয় পরম জ্ঞান যে শাস্ত্র থেকে লাভ করা যায়, তাই বেদ ।

2) বেদের নামান্তর লিখ ।
উত্তর :- বেদের নামান্তরগুলি হল শ্রুতি, ত্রয়ী, আগম, ছন্দস্, নিগম।

3) বেদের অপর নাম ‘শ্রুতি’ কেন ?
উত্তর :- মহর্ষি বেদব্যাস কর্তৃক সংকলিত না হওয়া পর্যন্ত বেদ-মন্ত্র গুরুশিষ্য পরম্পরায়, সম্প্রদায়ক্রমে শ্রবণবিদ্ধৃত ও স্মৃতিসঞ্চিতরূপে বর্তমান ছিল বলেই বেদকে ‘শ্রুতি’ নামে অভিহিত করা হয়।

4) বেদের কয়টি ভাগ ও কী কী ?
উত্তর :- বেদের চারটি ভাগ। যথা- সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক, উপনিষদ্ ।

5) সংহিতা কী ?
উত্তর :- মন্ত্রের সমষ্টি ।

6) সংহিতা কয় প্রকার ও কী কী ?
উত্তর :- সংহিতা চার প্রকার । যথা- ঋক্, সাম, যজুঃ, অথর্ব ।

7) যজুঃ কী ?
উত্তর :- ঋক্ ও সাম ভিন্ন যজ্ঞানুষ্ঠানের প্রযোজ্য অবশিষ্ট মন্ত্রই যজুঃ ।

8) যজ্ঞকর্মে প্রধান ঋত্বিক কে ?
উত্তর :- যজ্ঞকর্মে প্রধান ঋত্বিক হলেন অধুর্যু ।

9) কর্মবেদ কার অপর নাম ?
উত্তর :- কর্মবেদ কার অপর নাম যজুর্বেদ ।

10) যজুর্বেদের কয়টি শাখা ও কী কী ?
উত্তর :- যজুর্বেদের দুইটি শাখা। কৃষ্ণ ও শুক্লযজুর্বেদ ।

11) শুক্লযজুর্বেদের অপর নাম কী?
উত্তর :- শুক্লযজুর্বেদের অপর নাম বাজসনেয়ী সংহিতা।

12) যজুর্বেদের প্রাচীনতম শাখার নাম কী ?
উত্তর :- যজুর্বেদের প্রাচীনতম শাখার নাম কৃষ্ণ যজুর্বেদ ।

13) কৃষ্ণযজুর্বেদের সংহিতার নাম কী ?
উত্তর :- কৃষ্ণযজুর্বেদের সংহিতার নাম তৈত্তিরীয় সংহিতা ।

14) ‘কৃষ্ণযজুর্বেদ’ নামকরণের কারণ কী ?
উত্তর :- কৃষ্ণযজুর্বেদে মন্ত্র ও ব্রাহ্মণ বা যজ্ঞানুষ্ঠানের ব্যাখ্যা প্রভৃতি মিশ্রিত অবস্থায় আছে; এইজন্য বেদের পাঠোদ্ধার ও অর্থোপলব্ধি সমধিক জটিল বলে এর নাম হয়েছে কৃষ্ণযজুর্বেদ।

15) শুক্লযজুর্বেদের সংহিতার নাম কী ?
উত্তর :- শুক্লযজুর্বেদের সংহিতার নাম বাজসনেয়ী সংহিতা ।

16) ‘শুক্লযজুর্বেদ’ নামকরণের কারণ কী ?
উত্তর :- ঋষি যাজ্ঞবল্ক্য বৈশম্পায়নের নিকট অধীত বিদ্যা প্রত্যর্পণ করে বেদবিদ্যালাভের জন্য সূর্যের উপাসনা করলে সূর্যদেব বাজী অর্থাৎ অশ্বের রূপ ধারণ করে যাজ্ঞবল্ক্যকে বেদ উপদেশ দেন, এইজন্যই এই সংহিতার নাম বাজসনেয়ী সংহিতা।

17) ‘ব্রহ্মবেদ’ কাকে বলে ?
উত্তর :- অথর্ববেদকে ‘ব্রহ্মবেদ’ বলে।

18) অথর্ববেদের প্রাচীন নাম কী ? কেন?
উত্তর :- অথর্ববেদের প্রাচীন নাম অথর্বাঙ্গিরসবেদ। অথর্ব ও আঙ্গিরস শব্দে অথর্ববেদের দুটি ভাগকে বোঝায়। অথর্বন্ ভাগে ভেষজ বিদ্য, শান্তি, পৌষ্টিক আদি শুভ কার্যাদি এবং আঙ্গিরস ভাগে শত্রুবধাদি, মারণ, উচাটন প্রভৃতি ঐন্দ্রজালিক ক্রিয়া বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ শুভাশুভজনক বিদ্যা অথর্ববেদে আছে বলেই এই বেদের নাম হয়েছে অথর্বাঙ্গিরসবেদ।

19) অথর্ববেদের কয়টি সূক্ত ঋগ্বেদ থেকে গৃহীত ?
উত্তর :- অথর্ববেদের বারোটি সূক্ত ঋগ্বেদ থেকে গৃহীত।

20) অথর্ববেদের নিজস্ব সূক্ত সংখ্যা কত ?
উত্তর :- অথর্ববেদের নিজস্ব সূক্ত সংখ্যা 719 টি ।

21) পৈপ্পলাদ শাখার অথর্ববেদ কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর :- ডঃ ব্যূহলার ।

22) সায়ণ অথর্ববেদের কোন শাখার ভাষ্য রচনা করেন ?
উত্তর:- শৌনকীয় ।

23) ইন্দ্রজালাত্মক সুক্ত কোন বেদের অন্তর্গত?
উত্তর :- অথর্ববেদ ।

24) রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত মন্ত্রকে কী বলে ?
উত্তর :- রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত মন্ত্রকে বলেভৈষজ্য মন্ত্র।

25) আয়ুবর্ধক মন্ত্র গুলিকে কী বলা হয় ?
উত্তর :- আয়ুয্যমন্ত্র ।

26) ‘অভিচারমূলক’ মন্ত্র কী ?
উত্তর :- অসুর, দানব, ভূতপ্রেত, শত্রু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্যবহৃত মন্ত্র। এর মাধ্যমে অন্যের অনিষ্ট সাধনা করা যেত।

27) বেদাঙ্গ কী ?
উত্তর :- বেদের অঙ্গ। বেদ পাঠ ও অর্থ উপলব্ধি করার জন্য সহায়ক গ্রন্থ। বেদ সঠিক ভাবে জানতে হলে বা বুঝতে হলে এই বেদাঙ্গের জ্ঞান অপরিহার্য এবং বাধ্যতামূলক।।

28) বেদাঙ্গ কয়টি?
উত্তর :- ছয়টি।

29) ছয়টি বেদাঙ্গ কী কী?
উত্তর :- “শিক্ষা কল্পো ব্যাকরণং নিরুক্তং ছন্দো জ্যোতিষম্” অর্থাৎ শিক্ষা, কল্প, ব্যাকরণ, নিরুক্ত, ছন্দঃ ও জ্যোতিষ— এই ছটি বেদাঙ্গ।

30) বেদাঙ্গকে কী রূপে কল্পনা করা হয়েছে ?
উত্তর :- বেদ পুরুষের ছয়টি অঙ্গরূপে কল্পনা করা হয়েছে।

31) ছয়টি বেদাঙ্গকে বেদ পুরুষের কোন কোন অঙ্গরূপে কল্পনা করা হয়েছে ?
উত্তর :-

“ছন্দঃ পাদৌ তু বেদস্য হস্তৌ কল্পোহথ পঠ্যতে।
জ্যোতিষাময়নং চক্ষুর্নিরুক্তং শ্রোত্রমুচ্যতে।।
শিক্ষা ঘ্রাণং তু বেদস্য মুখং ব্যাকরণং স্মৃতম্।
তস্মাৎ সাঙ্গমধীত্যৈব ব্ৰহ্মলোকে মহীয়তে।।”

অর্থাৎ ছন্দ বেদের পাদদেশ, কল্প বেদের হস্তযুগল, জ্যোতিষ বেদের চক্ষু, নিরুক্ত কর্ণ, শিক্ষা নাসিকা, এবং ব্যাকরণ বেদের মুখ। এই ছয়টি অঙ্গ সহ বেদ অধ্যয়ন করলে ব্রহ্মলোক প্রাপ্তি ঘটে।

32) বেদাঙ্গের রচনাকাল কখন ?
উত্তর :- Max Muller-এর মতে 600 – 200 খৃঃ পূর্বাব্দের মধ্যে বেদাঙ্গগুলি রচিত হয়েছিল। Macdonell-এর মতে 500 – 200 খৃঃ পূর্বাব্দই বেদাঙ্গসমূহের রচনাকাল।

33) যে কোনো দুটি বেদের শিক্ষা গ্রন্থের নাম লেখ।
উত্তর :- বেদের শিক্ষা গ্রন্থগুলি নিচে দেওয়া হল—

বেদশিক্ষাগ্রন্থ
ঋগ্বেদপাণিনীয় শিক্ষা
সামবেদনারদীয় শিক্ষা
শুক্ল যজুর্বেদযাজ্ঞাবল্ক্য শিক্ষা
অথর্ববেদমাণ্ডুকী শিক্ষা

34) বৈদিক ছন্দশাস্ত্রের রচয়িতা কে?
উত্তর :- বৈদিক ছন্দশাস্ত্রের রচয়িতা পিঙ্গলমুনি।

অনুরূপ পাঠ

বৈদিক সাহিত্যের SAQ প্রশ্নোত্তর এর মত একইধরণের বিষয় জানতে নিম্নের LINK এ CLICK করো ।

ধন্যবাদ

বৈদিক সাহিত্যের SAQ প্রশ্নোত্তর তথা আমাদের www.sanskritruprekha.com সাইট Visit করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সংস্কৃতের আরো অনেক তথ্য পাওয়ার জন্য Home Page আসুন। Home Page পৌঁছানোর জন্য CLICK HERE👈

Leave a Comment