সংস্কৃত স্বরসন্ধির SAQ প্রশ্নোত্তর একাদশ শ্রেণীর SEMESTER – 2 পাঠ্য হিসেবে নির্দিষ্ট। বিশেষতঃ যণ্, অয়াদি সূত্রের নিয়ম ও প্রয়োগ পাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত। স্বরসন্ধির প্রতিটি SAQ প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হল। সঙ্গে স্বরসন্ধির নিয়মগুলি পূর্ণাঙ্গরূপে দেওয়া হয়েছে।
সংস্কৃত স্বরসন্ধির SAQ প্রশ্নোত্তর আলোচনা করতে হলে প্রথমেই সন্ধি সম্পর্কে কিছু কথা সংক্ষেপে জানা দরকার। “পরঃ সন্নিকর্ষঃ সংহিতা” অর্থাৎ অতিশয় দ্রুত উচ্চারণজনিত দুটি সন্নিহিত বর্ণের পারস্পরিক ধ্বনিগত মিলনকে সন্ধি বলে। সন্ধির অপর নাম সংহিতা। ‘সন্ধি’ শব্দের অর্থ মিলন। দ্রুত উচ্চারণ, উচ্চারণের কর্কশতা নিবারণ এবং ভাষাকে শ্রুতিমধুর করার জন্য সন্ধির প্রয়োজন।যেমন – ‘বিদ্যা’ আর ‘আলয়’ দুটি শব্দ অতিশয় দ্রুত উচ্চারণ করলে হবে ‘বিদ্যালয়’। অর্থাৎ দুটি ‘আ’ মিলে একটি ‘আ’ তে পরিণত হল। এইভাবে ধ্বনির সন্নিকৃষ্ট হওয়াকেই সন্ধি বলে। সন্ধি তিন প্রকার। যথা—
স্বরসন্ধিঃ— স্বরবর্ণের সঙ্গে স্বরবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে স্বরসন্ধি বলে। যথা—
- হিম + অচলঃ = হিমাচলঃ
- বিদ্যা + আলয়ঃ = বিদ্যালয়ঃ
- রত্ন + আকরঃ = রত্নাকরঃ
- সু + আগতম্ = স্বাগতম্
- নৈ + অকঃ = নায়কঃ
যণ্ সন্ধির নিয়ম
“ইকো যণ্ অচি” অর্থাৎ অসবর্ণ স্বর পরে থাকলে ই, উ, ঋ এবং ৯স্থানে যথাক্রমে য্, ব্, র্ এবং ল্ হয়। অর্থাৎ
1) ই-কার কিম্বা ঈ-কার ভিন্ন অন্য স্বরবর্ণ পরে থাকলে ই-কার কিম্বা ঈ-কার স্থানে য্ হয়। ঐ য্, য-ফলা হয়ে পূর্ববর্ণে যুক্ত হয় এবং পরের স্বরবর্ণ য-কারে যুক্ত হয়। যথা —
- যদি + অপিঃ = যদ্যপিঃ
- প্রতি + অহম্ = প্রত্যহম্
- মুনি + ঋষভঃ = মন্যৃষভঃ
- অতি + ঔদার্যম্ = অত্যৌদার্যম্
- নদী + অম্বু = নদ্যম্বু
- দেবী + আগতা = দেব্যগতা
2) উ-কার কিম্বা ঊ-কার ভিন্ন অন্য স্বরবর্ণ পরে থাকলে উ-কার কিম্বা ঊ-কার স্থানে ব্ হয়। ঐ ব্ পূর্ববর্ণে যুক্ত হয় এবং পরের স্বরবর্ণ ব-কারে যুক্ত হয়। যথা —
- অনু + ইতঃ = অন্বিতঃ
- সু + আগতম্ = স্বাগতম্
- মধু + ঋতে = মধ্বৃতে
- বধূ + আলয়ঃ = বধ্বালয়ঃ
- বধূ + আদিঃ = বধ্বাদিঃ
- বধূ + ঔদার্যম্ = বধ্বৌদার্যম্
3) ঋ-কার ভিন্ন অন্য স্বরবর্ণ পরে থাকলে ঋ-কার স্থানে র্ হয়। র্ পূর্ববর্ণে যুক্ত হয় এবং পরের স্বরবর্ণ র-এ যুক্ত হয়। যথা —
- পিতৃ + এষণা = পিত্রেষণা
- মাতৃ + অনুমতি = মাত্রনুমতি
- মাতৃ + ইচ্ছা = মাত্রিচ্ছা
অয়াদি সন্ধির নিয়ম
“এচোহয়্-অব্-আয়্-আবঃ” অর্থাৎ এ-কার, ঐ-কার, ও-কার এবং ঔ-কারের পর স্বরবর্ণ থাকলে এ-কার স্থানে অয়্, ঐ-কার স্থানে আয়্, ও-কার স্থানে অব্ এবং ঔ-কার স্থানে আব্ হয়। ঐ অ-কার বা আ-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয় এবং পরের স্বরবর্ণ য্-কারে বা ব্-কারে যুক্ত হয়। যথা—
- স্তৌ + অকঃ = স্তাবকঃ
- নে + অনম্ = নয়নম্
- শে +এ = শয়ে
- শে + ঐ = শয়ৈ
- শে + অনম্ = শয়নম্
- শে + আতে = শয়াতে
- নৈ + অকঃ = নায়কঃ
- গৈ + অকঃ = গায়কঃ
- পো + অনঃ = পবনঃ
- ভো + অনম্ = ভবনম্
- রবৌ + অস্তমিতে = রবাবস্তমিতে
- রবৌ + উদিতে = রবাবুদিতে
- ভৌ + উকঃ = ভাবুকঃ
ব্যঞ্জনসন্ধিঃ— ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে স্বরবর্ণের কিংবা ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে ব্যঞ্জনবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলে। যথা—
সন্ধি বিচ্ছেদ পদ | সন্ধিবদ্ধ পদ |
দিক্ + অন্তঃ | দিগন্তঃ |
মহৎ + চক্রম্ | মহচ্চক্রম্ |
রাজ্ + নী | রাজ্ঞী |
প্রাক্ + এব | প্রাগেব |
হসন্ + আগতঃ | হসন্নাগতঃ |
বিসর্গসন্ধিঃ— বিসর্গের সঙ্গে স্বরবর্ণের কিংবা বিসর্গের সঙ্গে ব্যঞ্জনবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে বিসর্গসন্ধি বলে। যথা—
- পুনঃ + অপি = পুনরপি
- বালকঃ + অয়ম্ = বালকোহয়ম্
- পুনঃ + চ = পুনশ্চ
SAQ প্রশ্নোত্তর
স্বরসন্ধির SAQ প্রশ্নোত্তর গুলি নিম্নে দেওয়া হল।
1) সন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর :- সন্ধির অপর নাম ‘সংহিতা’। পাণিনি সংহিতার সংজ্ঞায় বলেছেন— “পরঃ সন্নিকর্ষঃ সংহিতা” অর্থাৎ পরস্পর সন্নিহিত দুটি বর্ণের অতিশয় দ্রুত উচ্চারণজনিত পারস্পরিক ধ্বনিগত মিলনকে সন্ধি বলে। যথা—
বিদ্যা + আলয়ঃ = বিদ্যালয়ঃ, এখানে দুটি আ-কার মিলিত হয়ে আ-কার হয়েছে।
2) সন্ধি কয়প্রকার? কী কী?
উত্তর :- সন্ধি তিন প্রকার। যথা— স্বরসন্ধি, ব্যঞ্জনসন্ধি ও বিসর্গসন্ধি।
3) সন্ধি বিষয়ক কারিকাটি লেখ।
উত্তর :- সন্ধি বিষয়ক কারিকাটি হল—
সংহিতৈক পদে নিত্যা নিত্যা ধাতূপসর্গয়োঃ।
সমাসেহপি চ নিত্যা স্যাৎ সা চান্যত্র বিভাষিতা।।
4) কোথায় কোথায় সন্ধি নিত্য? কোথায় বা সন্ধি অবশ্য করণীয় নয়?
উত্তর :- একপদে, ধাতু ও উপসর্গের মধ্যে এবং সমাসে সন্ধি অবশ্য করতে হবে। এতদ্ ব্যতীত অন্যস্থলে সন্ধি করা বা না করা লেখকের ইচ্ছাধীন। যেমন—
- একপদের ক্ষেত্রে :– নে + অনম্ = নয়নম্
- ধাতু ও উপসর্গের ক্ষেত্রে :– প্র + অবিশৎ = প্রাবিশৎ, প্র + আহ = প্রাহ, সম্ + কৃতঃ = সংস্কৃতঃ
- সমাসের ক্ষেত্রে :– পঞ্চ + আননঃ = পঞ্চাননঃ
- বাক্যের ক্ষেত্রে সন্ধি লেখকের ইচ্ছাধীন :– রামো গ্রামং গচ্ছতি অথবা রামঃ গ্রামম্ গচ্ছতি।
5) সন্ধি কেন করা হয়?
উত্তর :- দীর্ঘ উচ্চারণ থেকে বিরতি পেতে, উচ্চারণের কর্কশতা দূর করতে এবং ভাষাকে শ্রুতিমধুর করতে সন্ধির প্রয়োগ করা হয়।
6) স্বরসন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর :- সন্নিহিত দুটি স্বরবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে স্বরসন্ধি বলে। যথা— যথা + উক্তম্ = যথোক্তম্। এখানে আ-কার এবং উ-কার দুটি স্বরবর্ণের মিলনে ও-কার হয়েছে। ও-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়েছে।
7) ‘অচ্’ বলতে কি বোঝায়?
উত্তর :- ‘অচ্’ হল একটি প্রত্যাহার। মাহেশ্বর সুত্রে অচ্ বলতে সমস্ত স্বরবর্ণকে বোঝায়।
8) ‘এচ্’ বলতে কি বোঝায়?
উত্তর :- ‘এচ্’ হল একটি প্রত্যাহার। মাহেশ্বর সুত্রে এচ্ বলতে এ, ও, ঐ এবং ঔ চারটি বর্ণকে বোঝায়।
9) ‘ইক্’ বলতে কি বোঝায়?
উত্তর :- ‘ইক্’ হল একটি প্রত্যাহার। মাহেশ্বর সুত্রে ইক্ বলতে ই , উ , ঋ এবং ঌ চারটি বর্ণ ও এদের দীর্ঘ বর্ণগুলিকে বোঝায়।
10) ‘যণ্’ বলতে কি বোঝায়?
উত্তর :- ‘যণ্’ হল একটি প্রত্যাহার। মাহেশ্বর সুত্রে যণ্ বলতে য , ব , র এবং ল চারটি অন্তঃস্থ বর্ণকে বোঝায়।
11) স্বরসন্ধির যণ্ বিষয়ক সূত্রটি অর্থসহ লেখো।
উত্তর :- স্বরসন্ধির যণ্ বিষয়ক সূত্রটি হল, “ইকো যণ্ অচি” অর্থাৎ অসবর্ণ স্বর পরে থাকলে ই, উ, ঋ এবং ৯স্থানে যথাক্রমে য্, ব্, র্ এবং ল্ হয়।
12) নদী + অম্বু = নদ্যম্বু, কোন্ নিয়মে সন্ধি হয়েছে? বুঝিয়ে দাও।
উত্তর :- “ইকো যণ্ অচি” সূত্রানুসারে ঈ-কারের পর অ-কার থাকায় ঈ-কার স্থানে য্ হয়েছে এবং য্ পূর্ব বর্ণ দ্-এর সঙ্গে এবং পরবর্তী অ যুক্ত হয়ে দ্য হয়েছে।
13) সু + আগতম্ = স্বাগতম্, কোন্ নিয়মে সন্ধি হয়েছে? বুঝিয়ে দাও।
উত্তর :- “ইকো যণ্ অচি” সূত্রানুসারে উ-কারের পর আ-কার থাকায় উ-কার স্থানে ব্ হয়েছে এবং ব্ পূর্ব বর্ণ স-এর সঙ্গে এবং পরবর্তী আ যুক্ত হয়ে স্বা হয়েছে।
14) সন্ধি বিচ্ছেদ করো :- গায়কঃ, মাত্রনুমতি।
উত্তর :- গায়কঃ = গৈ + অকঃ = , মাত্রনুমতি = মাতৃ + অনুমতি।
15) সন্ধি বিচ্ছেদ করো :- নাবিকঃ, মাত্রৈশ্বর্যম্।
উত্তর :- নাবিকঃ = নৌ + ইকঃ = , মাত্রৈশ্বর্যম্ = মাতৃ + ঐশ্বর্যম্।
16) সন্ধি বিচ্ছেদ করো :- তাবত্র, শয়িতম্।
উত্তর :- তাবত্র = তৌ + অত্র = , শয়িতম্ = শে + ইতম্।
17) সন্ধি বিচ্ছেদ করো :- মুক্তাবৈকম্, অত্যৌৎস্যুকম্।
উত্তর :- মুক্তাবৈকম্ = মুক্তৌ + ঐক্যম্ = , অত্যৌৎস্যুকম্ = অতি + ঔৎস্যুকম্।
অনুরূপ পাঠ
সংস্কৃত স্বরসন্ধির SAQ প্রশ্নোত্তর এর মত একইধরণের বিষয় জানতে নিম্নের LINK এ CLICK করো ।